লেপক্ষী মন্দিরের এই ঝুলন্ত স্তম্ভটি সত্যিই বেশ আশ্চর্যজনক...

Tripoto
Photo of লেপক্ষী মন্দিরের এই ঝুলন্ত স্তম্ভটি সত্যিই বেশ আশ্চর্যজনক... 1/15 by Surjatapa Adak

অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যের ছোট্ট শহর লেপক্ষীর ভেরাভদ্র মন্দিরের ঝুলন্ত স্তম্ভগুলি ভারতের বিখ্যাত দর্শনীয় স্থান হিসেবে পরিচিত ।আপনি কি কখনও এই স্থানে কখন ভ্রমণ করেছেন? যদি আপনার উত্তরটি না হয়, তাহলে এই ব্লগের সাহায্যে এই মন্দিরে মানস ভ্রমণ করে নিতে পারেন । ব্যাঙ্গালুরু শহর থেকে সপ্তাহান্তের ছুটি নিয়ে এই ঐতিহাসিক স্থাপত্যটি অনায়াসেই পরিদর্শন করে নিতে পারেন ।

Photo of লেপক্ষী মন্দিরের এই ঝুলন্ত স্তম্ভটি সত্যিই বেশ আশ্চর্যজনক... 2/15 by Surjatapa Adak

লেপক্ষী মন্দিরের কাহিনি

Photo of লেপক্ষী মন্দিরের এই ঝুলন্ত স্তম্ভটি সত্যিই বেশ আশ্চর্যজনক... 3/15 by Surjatapa Adak
Photo of লেপক্ষী মন্দিরের এই ঝুলন্ত স্তম্ভটি সত্যিই বেশ আশ্চর্যজনক... 4/15 by Surjatapa Adak

লেপক্ষী মন্দিরের কাহিনির আড়ালে রয়েছে রামায়ণ। রাবণ সীতাকে অপহরণ করলে জটায়ু সীতাকে রক্ষা করার চেষ্টা করেন । তবে যাত্রাপথে জটায়ুর আঘাত লেগে মাটিতে পড়ে যায় । সেই সময় রাম নিজের হাতে জটায়ুকে নিয়ে বলেন ' লে পক্ষী' ( তেলেগুতে এই শব্দের অর্থ - জেগে ওঠো পাখী ) এবং এই শব্দটি থেকেই এই স্থানটির নাম লেপক্ষী । এই মন্দিরটি ভেরাভদ্র ( শিব) দেবতাকে উৎসর্গ করেই ভিরান্না এবং ভিরূপান্না নামক দুই ভাই এই মন্দির নির্মাণ করেন। এছাড়াও এই মন্দির নির্মাণের ক্ষেত্রে বিজয়নগর স্থাপত্যরীতির ব্যবহার করা হয়েছে । এই মন্দির দর্শনে গেলে আপনি দেখতে পাবেন শিবলিঙ্গকে আবদ্ধ করে রয়েছে পঞ্চসাপের বিশাল পাথর ।

Photo of লেপক্ষী মন্দিরের এই ঝুলন্ত স্তম্ভটি সত্যিই বেশ আশ্চর্যজনক... 5/15 by Surjatapa Adak
Photo of লেপক্ষী মন্দিরের এই ঝুলন্ত স্তম্ভটি সত্যিই বেশ আশ্চর্যজনক... 6/15 by Surjatapa Adak

মন্দিরের ২০০ মিটার মধ্যে আপনি খুঁজে পাবেন বিশাল নন্দী ( ষাঁড় )মূর্তি । প্রায় ১৪ - ১৫ ফিটের নন্দী মূর্তিটি বিশ্বের সবচেয়ে উচ্চতম মূর্তি হিসেবে পরিচিত ।এই মন্দিরে দেওয়ালগুলিতে অঙ্কিত রয়েছে নানান চিত্র । তবে এই মন্দিরের প্রধান দর্শনীয় স্থান হলো - ঝুলন্ত স্তম্ভ ।

মন্দিরের লৌকিক কাহিনি

Photo of লেপক্ষী মন্দিরের এই ঝুলন্ত স্তম্ভটি সত্যিই বেশ আশ্চর্যজনক... 7/15 by Surjatapa Adak
Photo of লেপক্ষী মন্দিরের এই ঝুলন্ত স্তম্ভটি সত্যিই বেশ আশ্চর্যজনক... 8/15 by Surjatapa Adak

গ্রামবাসীদের বিশ্বাস পাহাড়ের উপর গড়ে ওঠা এই মন্দিরটি কুরমাশাইলা নামে পরিচিত । এই পাহাড়টি অনেকটা কচ্ছপের আকৃতির । একদা এই স্থানের প্রধান ভিরান্না এবং ভিরূপান্না কল্যানমণ্ডপাম নির্মাণ করেন । লৌকিক কাহিনি অনুযায়ী জানা যায় ভিরূপান্নার পুত্র অন্ধ ছিলেন । একদিন তিনি স্বপ্নে শিবের দর্শন পান এবং শিব তাকে আদেশ দেন মন্দির নির্মাণ করার । শোনা যায় ভিরূপান্না মন্দির নির্মাণের সময় তাঁর অন্ধ পুত্র সুস্থ হয়ে ওঠেন । রাজসভার অন্যান্য সদস্যরা হিংসাত্মক হয়ে সেই স্থানের রাজাকে অভিযোগ করেন যে ভিরূপান্না মন্দির নির্মাণের টাকা নিয়ে তাঁর পুত্রকে সুস্থ করে তোলেন । এই অভিযোগ শোনার পর রাজা ভিরূপান্নাকে অন্ধ করে দেওয়ার আদেশ দেন । সমস্ত ঘটনা জানার পর ভিরূপান্না নিজের চোখ উপরে কল্যানমণ্ডপাম এর দেওয়ালে ছুড়ে ফেলেন । গ্রামবাসীদের বিশ্বাস আজও সেই দেওয়ালে সেই রক্তের দাগ লেগে রয়েছে ।

Photo of লেপক্ষী মন্দিরের এই ঝুলন্ত স্তম্ভটি সত্যিই বেশ আশ্চর্যজনক... 9/15 by Surjatapa Adak

বিশাল পদচিহ্ন

Photo of লেপক্ষী মন্দিরের এই ঝুলন্ত স্তম্ভটি সত্যিই বেশ আশ্চর্যজনক... 10/15 by Surjatapa Adak

এখানে মাটিতে বিশাল পদচিহ্ন এর সন্ধান পাওয়া যায় । মনে করা হয় এখানকার মানুষজন সেই সময় ২০- ২৫ ফিট উচ্চতা সম্পন্ন ছিলেন এবং তাদের পদচিহ্ন গুলি ও ২.৫ ফিট লম্বা ছিল ।

নন্দী মূর্তি

Photo of লেপক্ষী মন্দিরের এই ঝুলন্ত স্তম্ভটি সত্যিই বেশ আশ্চর্যজনক... 11/15 by Surjatapa Adak

এই মূর্তিটি প্রায় ৬৬০ ফিট উচ্চতা সম্পন্ন এবং সম্পূর্ণ মূর্তিটি একটি পাথর দ্বারাই নির্মিত ।

ঝুলন্ত স্তম্ভ

Photo of লেপক্ষী মন্দিরের এই ঝুলন্ত স্তম্ভটি সত্যিই বেশ আশ্চর্যজনক... 12/15 by Surjatapa Adak

এই স্তম্ভ দর্শনের সময় স্তম্ভগুলির নিচে কাপড়ের টুকরো দেখতে পাবেন । তবে সবচেয়ে মজার বিষয় হলো এই স্তম্ভগুলি কিন্তু কোনোভাবে একে অপরের সাথে সঙ্গবদ্ধ নয় ।খালি চোখে দেখে আপনিও হতবাক হবেন । প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি সবকয়টি স্তম্ভ যে সঙ্গবদ্ধ নয় এমনটাও ঠিক নয় । মন্দিরের একেবারে শেষপ্রান্তের স্তম্ভটি মাটির সাথে সংযুক্ত। এটি কিন্তু একেবারেই বাতাসে ঝুলন্ত স্তম্ভ নয় ।

Photo of লেপক্ষী মন্দিরের এই ঝুলন্ত স্তম্ভটি সত্যিই বেশ আশ্চর্যজনক... 13/15 by Surjatapa Adak
Photo of লেপক্ষী মন্দিরের এই ঝুলন্ত স্তম্ভটি সত্যিই বেশ আশ্চর্যজনক... 14/15 by Surjatapa Adak

আসলে এই রহস্যকে সমাধান করা সম্ভব, প্রকৃতপক্ষে এখানে কোন রকম রহস্যই নেই । একটু ভালো করে পর্যবেক্ষণ করলে জানা যায় এখানে বাতাসে ঝুলন্ত কোন স্তম্ভই নেই । তবে এই মন্দিরের স্থাপত্য আপনাকে অভিভূত করবেই ।

দ্রষ্টব্যঃ

Photo of লেপক্ষী মন্দিরের এই ঝুলন্ত স্তম্ভটি সত্যিই বেশ আশ্চর্যজনক... 15/15 by Surjatapa Adak

এই মন্দির দর্শন করে আপনি বিজয়নগর স্থাপত্য সম্পর্কে বিশদে জানতে পারবেন । মন্দিরের নানান অজানা কাহিনী সম্পর্কে জানতে গাইডের সাহায্য নিতে কিন্ত ভুলবেন না । এই মন্দিরটির পরিবেশ বেশ শান্ত এবং নির্জন । এই সুন্দর পরিবেশকে স্মৃতি হিসেবে ধরে রাখতে এই মন্দিরকে ক্যামেরাবন্দী করে নিতে পারেন । এখানে খাবারের ব্যবস্থা নেই, তাই মন্দির দর্শনের সময় সাথে খাবার রাখাই ভালো ।

কীভাবে যাবেন?

গাড়িতে - ব্যাঙ্গালুরু থেকে ১২৫ কিমি দূরত্ব অতিক্রম করে পৌঁছে যেতে পারেন এই মন্দিরে । যাত্রাপথে আপনি নন্দী পাহাড় দর্শন করে নিতে পারেন ।

বাসে - বাসে যেতে চাইলে প্রথমে ব্যাঙ্গালুরু থেকে বাসে চেপে পৌঁছে যান হিন্দুপুর । এরপর হিন্দুপুর থেকে APSRTC এর বাসে চেপে ১৫ কিমি দূরত্ব অতিক্রম করে পৌঁছে যান লেপক্ষী । হিন্দুপুর থেকে ট্যাক্সি ধরেও পৌঁছে যেতে পারেন লেপক্ষী ।

ট্রেনে - লেপক্ষী পৌঁছানোর জন্য কোনও ট্রেন পরিষেবা নেই । তবে হিন্দুপুর পর্যন্ত ট্রেন পরিষেবা রয়েছে । হিন্দুপুর স্টেশন থেকে গাড়ি ভাড়া করে পৌঁছে যেতে পারেন লেপক্ষী।

নিজের বেড়ানোর অভিজ্ঞতা ট্রিপোটোর সঙ্গে ভাগ করে নিন আর সারা বিশ্ব জুড়ে অসংখ্য পর্যটকদের অনুপ্রাণিত করুন।

বিনামূল্যে বেড়াতে যেতে চান? ক্রেডিট জমা করুন আর ট্রিপোটোর হোটেল স্টে আর ভেকেশন প্যাকেজে সেগুলো ব্যবহার করুন।