অজানা অচেনা অরুণাচল প্রদেশ: এই ১১টি অ্যাক্টিভিটির মধ্যে চিনে নিন নর্থ-ইস্টের এই বিশেষ ডেস্টিনেশনটিকে

Tripoto

উত্তর-পূর্ব ভারতবর্ষের শেষ কোণে রয়েছে অরুণাচল প্রদেশ। ভুটান, তিব্বত ও মায়ানমার এই তিন দেশ দিয়ে ঘেরা অরুনাচল প্রদেশ কিন্তু এখনও লোকচক্ষুর অন্তরালেই বলা যায়। জাতীয় সুরক্ষার নিয়ম-নীতির কারণে অরুণাচল প্রদেশ এখনও পর্যটকদের মনে সেভাবে জায়গা করে উঠতে পারেনি। সম্প্রতি, অরুনাচল প্রদেশের বিভিন্ন অঞ্চল সরকারের তরফে পর্যটকদের জন্যে খুলে দেওয়া হয়েছে। ফলস্বরূপ ভারতীয় নাগরিকরা বিশেষ পারমিটের সাহায্যে অত্যন্ত সহজেই এখানে ঘুরে আসতে পারবেন।

আশা করছি শীঘ্রই আপনার পরের ট্রিপে অরুনাচল প্রদেশ উঠে আসবে , হয়ে উঠবে আপনার ভালোবাসার এক ডেস্টিনেশন

তালিকায় রইল অরুণাচল প্রদেশে উপভোগ করার মতো বিশেষ কিছু অ্যাক্টিভিটির প্রসঙ্গ, যা অন্য কোথাও খুঁজে পাওয়া মুশকিল

১. নামদফা জাতীয় বা রাষ্ট্রীয় উদ্যানে দেখুন রেড পান্ডা

ভাল্লুক গোত্রীয় Ailurus প্রজাতির Ailuridae পরিবারের শেষ জীবন্ত সদস্য লাল বা রেড পান্ডা। ভারতবর্ষে রেড পান্ডা সংরক্ষণের ২০টি সংরক্ষিত অঞ্চলের মধ্যে নামদফা অন্যতম। বায়োডাইভার্সিটির হটস্পট এই জাতীয় উদ্যানটি ভারতবর্ষের তৃতীয় বৃহত্তম জাতীয় উদ্যান এবং পূর্ব হিমালয়ের বৃহত্তম সংরক্ষিত অঞ্চল বলেই পরিচয় পেয়ে থাকে। দেবান থেকে সঙ্গে নিয়ে নিন লোকাল গাইড আর লাল পান্ডার খোঁজে রেনফরেস্টের ভেতরে হাইক করতে করতে পৌঁছে যান লিসু গ্রামে।

Photo of অজানা অচেনা অরুণাচল প্রদেশ: এই ১১টি অ্যাক্টিভিটির মধ্যে চিনে নিন নর্থ-ইস্টের এই বিশেষ ডেস্টিনেশনটিকে 1/9 by Aninda De
বিরল প্রাণী লাল পান্ডা (ছবি : সংগৃহীত)

কীভাবে যাবেন : অসমের ডিব্রুগড় এয়ারপোর্ট একেবারে কাছেই রয়েছে। সেখান থেকে প্রায় ৬ ঘণ্টার পথ পেরোলেই পৌঁছে যাবেন নামদফা জাতীয় উদ্যানে।

২. ঘুরে আসুন ভারতবর্ষের বৃহত্তম জেলা, আপার দিবাং ভ্যালি থেকে

৯১২৯ কিলোমিটার অঞ্চল জুড়ে অবস্থিত আপার দিবাং ভ্যালি ভারতের বৃহত্তম জেলা, কিন্তু জনঘনত্বে সর্বনিম্ন। তিব্বত থেকে হাজার বছর আগে আসা ইদু মিশমিস জাতি ও অন্যান্য জাতির আদিবাসীরা এই এলাকার মূল বাসিন্দা। একমাত্র আনিনি অঞ্চলের মাধ্যমে আপার দিবাং অবশিষ্ট ভারতবর্ষের সাথে যোগাযোগ বজায় রেখেছে। এই এলাকার মূল আকর্ষণ দিবাং অরণ্যপ্রাণী অভয়ারণ্য, যেখানে আপনি দেখা পেতে পারেন মিশমিস পাহাড়ের বড় বড় উড়ন্ত কাঠবেড়ালির। আপার দিবাং ভ্যালি চীন সীমান্তের কাছে হওয়ায় এখানে সুরক্ষা ব্যবস্থা বেশ কড়া, সমস্ত পরিচয়পত্র অবশ্যই সবসময় নিজের সঙ্গে অবশ্যই রাখবেন।

Photo of অজানা অচেনা অরুণাচল প্রদেশ: এই ১১টি অ্যাক্টিভিটির মধ্যে চিনে নিন নর্থ-ইস্টের এই বিশেষ ডেস্টিনেশনটিকে 2/9 by Aninda De
প্রকৃতির অকৃপণ ছোঁয়া, সবুজের হাতছানি ( ছবি সৌজন্য : ফ্লিকার, https://www.flickr.com/photos/77436133@N03/7453921978)

কীভাবে যাবেন : নিকটতম এয়ারপোর্ট ডিব্রুগড় আর নিকটতম রেল স্টেশন তিনসুকিয়া পর্যন্ত এসে ট্যাক্সি নিয়ে চলে আসতে পারেন। তবে আনিনি-র পরে কিন্তু আর সড়কপথ নেই । সেক্ষেত্রে ট্রেকিং-ই হতে পারে একমাত্র মাধ্যম...

৩. তাল্লে ভ্যালি ট্রেক

অরুণাচল প্রদেশের প্রাচীন অরণ্য সভ্যতার খোঁজ পেতে চাইলে আর এখানকার আদিবাসী সংস্কৃতির সাথে পরিচিত হতে চাইলে যেতে পারেন তাল্লে ভ্যালি ট্রেকে। আপ্তানি জনগোষ্ঠীর বাসস্থান পানগে ভ্যালি, তাল্লে ভ্যালি এবং জ়িরো ভ্যালির মধ্যে দিয়ে, যা এই ট্রেকের গতিপথের মধ্যেই পড়ে। আপ্তানি জনগোষ্ঠী কিছু বিশেষ রীতি-নীতি মেনে চলে। যেমন "ট্যাবু পিরিয়ড" চলাকালীন এখানে শিকার করা বা জঙ্গলে প্রবেশ করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। ফলে এখানকার জৈব বৈচিত্র আজও অক্ষুণ্ণ। পার্বত্য উপত্যকা, পাহাড়ি জলপ্রপাত আর ঘাস জমির চড়াই উৎরাই সম্বলিত এই ট্রেক অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমী মানুষদের জন্যে একদম আদর্শ বলতেই হবে।

Photo of অজানা অচেনা অরুণাচল প্রদেশ: এই ১১টি অ্যাক্টিভিটির মধ্যে চিনে নিন নর্থ-ইস্টের এই বিশেষ ডেস্টিনেশনটিকে 3/9 by Aninda De
তাল্লে ভ্যালি জুড়ে পাহাড়ি গাছপালা (ছবি সৌজন্যে : ইন্ডিয়া হাইকস্)

কীভাবে যাবেন : প্লেনে করে চলে আসুন গুয়াহাটি এয়ারপোর্ট। সেখান থেকে ট্রেনে করে আসুন নাহারলাগুন (১৫৬১৭ - GHY NHLN I C EXP – ছাড়ে রাট ৯টা ২০ মিনিটে – পৌঁছায় ভোর ৫ টায়ে)। নাহারলাগুন থেকে আরো এগোতে হলে লাগবে ইনার লাইন পারমিট। সেটি করিয়ে নিয়ে ট্যাক্সি ধরে চলে আসুন জ়িরো (নাহারলাগুন থেকে ১০০ কিমি দূরত্ব )। ট্রেকের শুরু জ়িরো থেকেই।

৪. দেখে আসুন মালিনীথানের প্রাচীন হিন্দু মন্দির

বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে ৫৫০ খ্রিস্টাব্দে স্থাপিত মালিনীথানের প্রাচীন হিন্দু মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পাওয়া যায়। ব্রম্মপুত্র নদীর উত্তর তীরে আর্য সভ্যতার অনুপ্রেরণায় এই মন্দিরটির সূচনা। মন্দিরের প্রধান বিগ্রহ হলেন দেবী দুর্গা, যিনি আরাধ্যা স্থানীয়দের লোকাচার ও ধর্মবিশ্বাসে। কথিত আছে, পুরাকালে শিশুপালের সঙ্গে ভীষ্মের কন্যা রুক্মিণীর বিবাহকালে, শ্রীকৃষ্ণ রুক্মিণীকে উদ্ধার করেন এবং দেবী পার্বতী এই অঞ্চলে তাদের আশ্রয় দেন। আঞ্চলিক ফুল দিয়ে তৈরী মালা দিয়ে দেবী তাদেরকে বরণ করেন এবং মালিনী নামাঙ্কনের মাধ্যমে মালিনীথান মন্দিরটিকেও অনুপ্রাণিত করেন। দুর্গা ও কৃষ্ণ ভক্তদের জন্যে এই মন্দির একটি গুরুত্বপূর্ণ তীর্থস্থল। নভেম্বর মাস এই মন্দির ভ্রমণের জন্যে সবচেয়ে ভাল সময়।

কীভাবে যাবেন : নিকটতম এয়ারপোর্ট হলো লীলাবাড়ি এয়ারপোর্ট। ইটানগর বা গুয়াহাটি থেকে গাড়ি করে আকাশিগঙ্গা আসতে পারেন। সেখান থেকে এই মন্দির মাত্র ১২ কিমি দূর।

৫ . নিজেকে হারিয়ে ফেলুন জ়িরো মিউজিক ফেস্টিভ্যালের ছন্দে

ঠিক কবিতার মতোই, জীবনের শ্রেষ্ঠ অনুভূতিগুলি আমরা খুঁজে পাই মানসিক প্রশান্তির মধ্যে দিয়ে, আনন্দ উদযাপনের মধ্যে দিয়ে। এক্সপেক্টেশন বাড়াতে চাই না, কিন্তু জ়িরো মিউজিক ফেস্টিভ্যাল আপনার জীবন পাল্টে ফেলার মতোই এক অনুভূতি বলতে পারি। প্রকৃতির সৌন্দর্য এবং সংগীতের মায়াবী আকর্ষণ একসঙ্গে উপভোগ করতে শেখায় এই অসাধারণ উৎসব। জ়িরো মিউজিক ফেস্টিভ্যালে কোনও গায়ক বা কোনও ব্যান্ড একবারের বেশি অংশগ্রহণ করতে পারেন না, তাই প্রতিটি নতুন পারফরম্যান্সে থাকে এক অদ্ভুত উত্তেজনা। মেতে উঠুন অসীম উত্তেজনায়, মায়াবী আকাশের তলায় হারিয়ে যান জ়িরো উপত্যকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে, খুঁজে পান নিজের মধ্যে নতুন জীবনের স্পন্দনকে।

Photo of অজানা অচেনা অরুণাচল প্রদেশ: এই ১১টি অ্যাক্টিভিটির মধ্যে চিনে নিন নর্থ-ইস্টের এই বিশেষ ডেস্টিনেশনটিকে 4/9 by Aninda De
জ়িরো মিউজিক ফেস্টিভ্যালের ছবি (সংগৃহীত)

কীভাবে যাবেন : প্লেনে করে চলে আসুন গুয়াহাটি এয়ারপোর্ট। সেখান থেকে ট্রেনে করে আসুন নাহারলাগুন (১৫৬১৭ - GHY NHLN I C EXP – ছাড়ে রাট ৯টা ২০ মিনিটে – পৌঁছায় ভোর ৫ টা নাগাদ)। নাহারলাগুন থেকে আরও এগোতে হলে লাগবে ইনার লাইন পারমিট। সেটি করিয়ে নিয়ে ট্যাক্সি ধরে চলে আসুন জিরো ( নাহারলাগুন থেকে ১০০ কিমি দূরত্ব )।

৬. সেলা পাস্ ও লেকে সেলাম ঠুকুন আমাদের সাহসী সেপাইদের

সেলা পাস্ (আসল নাম সেল - লা হলেও, সেলা পাস্ নামেই বেশি পরিচিত ) গুয়াহাটি এবং তাওয়াং-এর মধ্যে অবস্থিত একটু সুউচ্চ পাহাড়ি পাস্ । ১৩৭০০ ফিট উচ্চতায় অবস্থিত সেলা পাসের খ্যাতির পেছনে রয়েছে বীর সেপাই যশবন্ত সিং রাওয়াতের গল্প। ১৯৬২ সালের ভারত-চীন যুদ্ধের সময় এই ভারতীয় সৈনিক অসমসাহসে চৈনিক সেনাদের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান এবং অরুণাচল প্রদেশকে রক্ষা করতে গিয়ে শহীদ হন। তিনি মরণোত্তর মহাবীর চক্রে ভূষিত হন। সেলা পাশের কাছে আছে পবিত্র সেলা লেক, যার জলরাশি শীতকালে বরফের চাদরে ঢাকা পরে যায়।

Photo of অজানা অচেনা অরুণাচল প্রদেশ: এই ১১টি অ্যাক্টিভিটির মধ্যে চিনে নিন নর্থ-ইস্টের এই বিশেষ ডেস্টিনেশনটিকে 5/9 by Aninda De
বরফে ঢাকা সেলা পাস (ছবি সৌজন্যে : সৌরভ গুপ্ত)

কীভাবে যাবেন : নিকটতম এয়ারপোর্ট হল গুয়াহাটি এয়ারপোর্ট। সেখান থেকে তাওয়াং হয়ে বাস বা ট্যাক্সি করে সেলা পাসে পৌঁছতে পারবেন বেশ স্বচ্ছন্দেই।

৭. ঘুরে আসুন ভারতবর্ষের সর্ববৃহৎ মনেস্ট্রি থেকে

বিংশ শতাব্দীর প্রথম ভাগেও তাওয়াং ছিল তিব্বতের অংশ। আজ তিব্বতি ইতিহাস ও সংস্কৃতির একটি বড় অংশ চীনের বজ্রকঠিন শাসনের অধীন হলেও, তাওয়াং-এ কিন্তু পাবেন তিব্বতি সভ্যতার অকৃত্রিম স্বাদ। তিব্বতি ভাষায় তাওয়াং গুম্ফার ওপর নাম গালদেন নামগে লাহৎসে, যার মানে "অমলিন রাত্রিতে মহাজাগতিক স্বর্গ"। এটি ভারতের বৃহত্তম ও পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম গুম্ফা। তিব্বতের বাইরে বৌদ্ধ ধর্মের তান্ত্রিক রীতিনীতির নিদর্শন একমাত্র এখানেই পাবেন।

কীভাবে যাবেন : ১৪৩ কিমি দূরের তেজপুর এয়ারপোর্ট নিকটতম এয়ারপোর্ট। সেখান থেকে লোকাল বাস বা ট্যাক্সি করে তাওয়াঙ মনাস্টেরি প্রায় ৮ ঘন্টার পথ।

Photo of অজানা অচেনা অরুণাচল প্রদেশ: এই ১১টি অ্যাক্টিভিটির মধ্যে চিনে নিন নর্থ-ইস্টের এই বিশেষ ডেস্টিনেশনটিকে 6/9 by Aninda De
মনেস্ট্রির ভিতরে ( ছবি : সংগৃহীত)

৮. কামেং নদীর জলে করুন রিভার রাফটিং

অরুণাচল প্রদেশের নদীতে রিভার রাফটিং কিন্তু দুর্বল হৃদয় লোকেদের জন্যে নয়। তবে যদি থাকে অ্যাডভেঞ্চারের নেশা, তাহলে বর্ষাকালে ভরা কামেং নদীর জলে করতেই পারেন রিভার রাফটিং। প্রায় ৪ দিন ধরে ট্রেক করে কামেং-এর দুর্গম পাহাড়ি খাত পেরিয়ে পৌঁছে যান রাফটিং স্থল সেপ্পা-তে। সেপ্পাতে প্রাচীন অরণ্যের পাশাপাশি দেখতে পাবেন ধবধবে সাদা বালির বিচ, যা কঠোরভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করেন এখানকার আদিবাসী জনগোষ্ঠীর সদস্যরা। তবে মনে রাখবেন, কামেং-এর প্রতিটি খরস্রোত গ্রেড ৪ বা তার-ও বেশি, তাই রাফটিং-এর পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকাটা জরুরি।

Photo of অজানা অচেনা অরুণাচল প্রদেশ: এই ১১টি অ্যাক্টিভিটির মধ্যে চিনে নিন নর্থ-ইস্টের এই বিশেষ ডেস্টিনেশনটিকে 7/9 by Aninda De
কামেং নদীতে রিভার রাফটিং (ছবি : সংগৃহীত)

কীভাবে যাবেন : প্রথমে প্লেনে করে গুয়াহাটি এয়ারপোর্ট, তারপর সেখান থেকে প্রায় ১১ ঘণ্টার ড্রাইভে পৌঁছে যাবেন সেপ্পা। তবে মাঝে গুয়াহাটি থেকে ৫ ঘণ্টা দূরে ভালুকপং-এ হল্ট করতে ভুলবেন না।

৯. দেখে আসুন তাওয়াঙের কাছে পানকাং তেং সো

বিখ্যাত প্যাংগং সো-এর মতন আরেকটি হাই-অলটিটিউড হিমবাহ গঠিত লেক হল তাওয়াঙের কাছে অবস্থিত পূর্ব হিমালয়ের পানকাং তেং সো। শীতকালের শুরুতে সমস্ত লেকটি জমে বরফে পরিণত হয়ে পর্যটকদের উপহার দেয় অনির্বচনীয় সৌন্দর্যের। সমুদ্রপৃষ্ঠ হতে ১২০০০ ফুট উপরে এই পি টি সো লেকের দেখা পাবেন মাধুরী লেকের যাত্রাপথটি। চারিদিকে সবুজ ঘাসভূমি আর সুউচ্চ বরফ দিয়ে ঢাকা পর্বত শৃঙ্গের পটভূমির মধ্যে অবস্থিত এই লেকের পাড়ে বসে, আপনিও খুঁজে পাবেন এক অনাবিল আনন্দ।

কীভাবে যাবেন : তাওয়াং থেকে মাত্র ১৭ কিমি দূরে হওয়ায়, শেয়ার ট্যাক্সি করে সহজেই এখানে পৌঁছনো যায়।

১০ . অংশগ্রহণ করুন মেচুকা-র লোসার উৎসবে

তিব্বত সীমানার কাছে, অরুনাচল প্রদেশের পশ্চিম সিয়াং জেলার মেচুকা উপত্যকা যেন এক লুকানো সম্পদ। সারাবছর ভারতীয় সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে সুরক্ষিত মেচুকা ভ্যালি প্রায় জনশূন্য; নিষ্ঠাবান পর্যটকরাই সক্ষম এখানে পৌঁছাতে। মেচুকা শহরে আছে প্রায় ৪০০ বছর পুরানো বৌদ্ধ গুম্ফা, আড়ম্বরহীন কিন্তু অপরূপ সুন্দর। বহু শতাব্দী আগে তিব্বত থেকে নিয়ে আসা বিভিন্ন বৌদ্ধমূর্তি এখনো এই গুম্ফার ভিতরে সংরক্ষিত। রামো উপজাতির মানুষরা এখানকার আদিবাসিন্দা। তাদেরই বাড়িতে পেয়ে যাবেন হোমস্টের আয়োজন, আছে সরকারি লজ-ও।

Photo of অজানা অচেনা অরুণাচল প্রদেশ: এই ১১টি অ্যাক্টিভিটির মধ্যে চিনে নিন নর্থ-ইস্টের এই বিশেষ ডেস্টিনেশনটিকে 8/9 by Aninda De
মেচুকা অঞ্চলের একটি প্রাচীন মনেস্ট্রি (ছবি : সংগৃহীত)

কীভাবে যাবেন : মেচুকা থেকে ৩৮৫ কিমি দূরে মোহনবাড়ি এয়ারপোর্ট আর অসমের শিলাপাথর রেলস্টেশন এখানকার মূল যোগাযোগকেন্দ্র। সেখান থেকে ট্যাক্সি বা লোকাল বসে চেপে মেচুকা যেতে পারেন।

১১. পাসিঘাটের সোলাং উৎসবে চেখে দেখুন থুকপা আর রাইস বিয়ার

পূর্ব হিমালয়ের অন্যতম সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠী হল কৃষিপ্রধান আদি উপবাসীর মানুষজন। নতুন ফসল ফলনের সময়ে তারা উদযাপন করেন সোলাং উৎসব, যা শুধু ধর্মীয় নয়, একটি সামাজিক উৎসব ও বটে। আদি জনগোষ্ঠীর ক্যালেন্ডার অনুযায়ী তাউনো এবং ইও মাসে (মোটামুটি অগাস্ট ও সেপ্টেম্বর মাস) চলে এই ৭ দিনের মহোৎসব পর্ব। উৎসবের শুরু হয় উৎসর্গীকৃত ভারতীয় বাইসন বা শূকর বলির মধ্যে দিয়ে। তারপরের কিছুদিন ধরে চলে মহাভোজের পালা। পাবেন বিভিন্ন মাংসের পদের সঙ্গে আপং বা স্থানীয় রাইস বিয়ার। সোলাং উৎসবের শেষদিনে আদি জনগোষ্ঠীর পুরুষরা একত্রিত হন এবং তির ধনুক তৈরি করেন ও সেগুলি দিয়ে তিরন্দাজি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন। আধুনিক যুগেও কীভাবে সহস্রপ্রাচীন জনগোষ্ঠীর উৎসব এবং উপাচার ঠিক কীভাবে সংরক্ষিত হতে পারে, তা বোঝার চাক্ষুস উপায় হল এই উৎসব।

Photo of অজানা অচেনা অরুণাচল প্রদেশ: এই ১১টি অ্যাক্টিভিটির মধ্যে চিনে নিন নর্থ-ইস্টের এই বিশেষ ডেস্টিনেশনটিকে 9/9 by Aninda De
সোলাং উৎসব উদযাপন (ছবি : রাজু সিং)

কীভাবে যাবেন : লীলাবাড়ি এয়ারপোর্ট নিকটতম যোগাযোগকেন্দ্র। তবে আরেকটা মজার রাস্তা হল প্রথমে ডিব্রুগড়ের মোহনবাড়ি পৌঁছনো। সেখান থেকে ব্রহ্মপুত্র নদী পেরিয়ে পৌঁছে যান ওইরামঘাট, সেখান থেকে পাসিঘাট আর কয়েক কিলোমিটারের রাস্তা। লক্ষ্মীপুর, ইটানগর বা গুয়াহাটি (ওভারনাইট জার্নি) থেকে বাসে করেও পাসিঘাট আসতে পারেন।

নিজের বেড়ানোর অভিজ্ঞতা ট্রিপোটোর সঙ্গে ভাগ করে নিন আর সারা বিশ্ব জুড়ে অসংখ্য পর্যটকদের অনুপ্রাণিত করুন।

বিনামূল্যে বেড়াতে যেতে চান? ক্রেডিট জমা করুন আর ট্রিপোটোর হোটেল স্টে আর ভেকেশন প্যাকেজে সেগুলো ব্যাবহার করুন

(এটি একটি অনুবাদকৃত/ অনুলিখিত আর্টিকেল। আসল আর্টিকেল পড়তে এখানে ক্লিক করুন!)

Further Reads