জামশেৎজী টাটার স্মৃতি বিজড়িত শহর জামশেদপুর: শিল্প এবং প্রযুক্তি নগর

Tripoto
Photo of Jamshedpur, Jharkhand, India by Deya Das

ভ্রমণপ্রিয় মানুষ হিসেবে নতুন দেশ বা নতুন শহর অন্বেষণ করার প্রতি বরাবরই প্যাশন ছিল। আর তাই অনেকদিন ধরেই একটা লম্বা ছুটির সুযোগ খুঁজছিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, কাজের ফাঁকে দীর্ঘ ছুটির অবকাশ মিলল না। তাই শেষ পর্যন্ত সপ্তাহান্তের ছুটি নিয়েই বেড়িয়ে পড়লাম। এইবারে আমার ডেস্টিনেশন পার্শ্ববর্তী রাজ্য ঝাড়খণ্ডের বিখ্যাত শিল্পশহর জামশেদপুর । এই জামশেদপুর শহর পরিক্রমার আগে এই শহরের নির্মাণের ইতিহাসটা একটু জেনে নেওয়া যাক ।

জামশেৎজী টাটার প্রাণের শহর জামশেদপুরের ইতিহাস

Photo of জামশেৎজী টাটার স্মৃতি বিজড়িত শহর জামশেদপুর: শিল্প এবং প্রযুক্তি নগর by Deya Das

ভারতে শিল্প বিস্তারের জনক জামশেৎজী টাটা সাধারণ মানুষের রুজি রোজগারের জন্য জামশেদপুর শহরে প্রথম শিল্পপ্রতিষ্ঠান নির্মাণের চিন্তা- ভাবনা শুরু করেন। শুধু তাই নয়, এই শিল্পপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রমিকদের স্থায়ী বাসস্থান নির্মাণ তথা টাটানগর শহরকে আধুনিকতার রঙে রঞ্জিত করার পরিকল্পনাও আগে থেকেই তৈরি করে রেখেছিলেন। এই শহর নির্মাণের ক্ষেত্রে জামশেৎজীর বক্তব্য ছিল - 'এমন এক শহর নির্মিত হবে যেখানে থাকবে বড়ো বড়ো গাছের সমাবেশ, খোলা জায়গা জুড়ে থাকবে অগণিত ফুলের উদ্যান। ফুটবল, হকি খেলার জন্য যথেষ্ট ব্যবস্থা থাকবে এবং হিন্দু মুসলিম এবং খ্রীষ্টানদের উপাসনার জন্য মন্দির, মসজিদ এবং চার্চ নির্মাণ করা হবে ।'

Photo of জামশেৎজী টাটার স্মৃতি বিজড়িত শহর জামশেদপুর: শিল্প এবং প্রযুক্তি নগর by Deya Das

১৯০৮ সালে জামশেদপুরের সাকচি এলাকায় 'টাটা স্টিল' (TISCO) শিল্পপ্রতিষ্ঠানটির নির্মাণের কাজ শুরু হয়। এর প্রায় ১০ বছরের মধ্যে এই নির্মায়মান শহরে অধিবাসীর সংখ্যা দাঁড়ায় ৫০,০০০। ১৯১৯ সালে তৎকালীন গভর্নর জেনারেল এবং ভারতের ভাইসরয় চেমসফোর্ড প্রথম বিশ্ব যুদ্ধের সমাপ্তির পর জামশেদপুরে এসে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে দেশের স্টিল ইন্ডাস্ট্রির সাহায্যে দেশের অর্থনৈতিক বিকাশের জন্য প্রশংসনীয় বক্তব্য পেশ করেন। চেমসফোর্ডই এই শহরের নাম পরিবর্তন করে জামশেদপুর নাম রাখেন। তার আগে এই শহরের নাম ছিল "কালিমাটি"।

অবস্থান

Photo of জামশেৎজী টাটার স্মৃতি বিজড়িত শহর জামশেদপুর: শিল্প এবং প্রযুক্তি নগর by Deya Das

ভৌগোলিক দিক থেকে জামশেদপুর শহরটি ঝাড়খণ্ড রাজ্যের দক্ষিণে পশ্চিমবঙ্গ এবং ওড়িশার রাজ্যের সীমান্তবর্তী স্থানে অবস্থিত।ছোটনাগপুর মালভূমি অঞ্চলের আওতাভুক্ত এই শহরটি সুবর্ণরেখা এবং খরকাই নদীর মিলনস্থল। আধুনিকতার পরিমণ্ডলে গঠিত এই শহরটি ২০২০ সালে ভারত সরকারের পরিচ্ছন্নতার সার্ভে "স্বচ্ছ সার্ভেক্ষন" অনুযায়ী সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন শহরের তকমার অধিকারী।

ভ্রমণ বিস্তৃতি -

Photo of জামশেৎজী টাটার স্মৃতি বিজড়িত শহর জামশেদপুর: শিল্প এবং প্রযুক্তি নগর by Deya Das

প্রথম দিন - শুক্রবার অফিসের কাজ থেকে ছুটি নিয়ে সকাল সকাল ৬.২০ এর জনশতাব্দী ট্রেন ধরে ঘন্টা চারেক দূরত্ব অতিক্রম করে পৌঁছে গেলাম টাটানগর স্টেশন । এরপর গাড়ি চেপে মাত্র ৩০ মিনিট দূরত্বে পৌঁছে গেলাম হোটেলে। সাত সকালে এতটা পথ অতিক্রম করায় বেশ ক্লান্ত লাগছিল, তাই স্থির করলাম দুপুরের লাঞ্চ সেরে বিকেলের দিকে এই শহর পরিদর্শন করব, আর সেই প্ল্যান মাফিক একটা গাড়ি ভাড়া করে মূল শহরের ভিতর দিয়ে এগিয়ে চললাম জুবিলি পার্কের উদ্দেশ্যে। তবে যাত্রাপথের প্রথমেই পৌঁছে গেলাম এখানকার কিনান স্টেডিয়ামে ।

জে আর ডি টাটা স্পোর্টস কমপ্লেক্স -

Photo of জামশেৎজী টাটার স্মৃতি বিজড়িত শহর জামশেদপুর: শিল্প এবং প্রযুক্তি নগর by Deya Das

জুবিলি পার্ক দর্শনের আগে পরিদর্শন করে নিলাম জে আর ডি টাটা স্পোর্টস কমপ্লেক্স। এই স্টেডিয়ামটি জামশেদপুর শহরের একমাত্র স্টেডিয়াম যেখানে ফুটবল এবং অ্যাথলেটিক কম্পিটিশনের জন্য বেছে নেওয়া হয় । ২০১১ সালে ন্যাশনাল গেমস এই স্টেডিয়ামেই অনুষ্ঠিত হয়। এই স্টেডিয়ামে এম. এস. ধোনি মুভির শুটিংও হয়েছিল। এছাড়াও বর্তমানে ISL লিগ ফুটবল খেলা জামশেদপুরের এই স্টেডিয়ামেই অনুষ্ঠিত হয় । এখানে এক সময় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচও অনুষ্ঠিত হত।

জুবিলি পার্ক -

Photo of জামশেৎজী টাটার স্মৃতি বিজড়িত শহর জামশেদপুর: শিল্প এবং প্রযুক্তি নগর by Deya Das

এই সুসজ্জিত পার্কটি জামশেদপুরের মুঘল গার্ডেন নামে পরিচিত এবং এটি সাকচি এলাকা অর্থাৎ শহরের এক্কেবারে প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত । জামশেদজী টাটা মাইশোর এর বৃন্দাবন গার্ডেন দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে এই পার্কটি নির্মাণ করেন ।

Photo of জামশেৎজী টাটার স্মৃতি বিজড়িত শহর জামশেদপুর: শিল্প এবং প্রযুক্তি নগর by Deya Das

সত্যি বলতে কি আমি এতো বড় পার্ক স্বচক্ষে দেখিনি । ছোট ছোট ঘাসের মধ্যে হেঁটে বেড়ানোর অনুভূতিটা বেশ অন্যরকম । পার্কের মাঝে বেশ কিছুটা অংশ জুড়ে রয়েছে রং বেরঙের ফুলের বাগান । এই পার্কে সাইকেলিং এবং দৌড়নোর জন্য নির্দিষ্ট স্থান রয়েছে । এখানে জামশেদজী টাটার একটি মূর্তি রয়েছে।

Photo of জামশেৎজী টাটার স্মৃতি বিজড়িত শহর জামশেদপুর: শিল্প এবং প্রযুক্তি নগর by Deya Das
Photo of জামশেৎজী টাটার স্মৃতি বিজড়িত শহর জামশেদপুর: শিল্প এবং প্রযুক্তি নগর by Deya Das

পার্কের অপরপ্রান্তে রয়েছে সুবিশাল লেক যা জয়ন্তী সরোবর নামে পরিচিত । ইচ্ছা করলে আপনি এখানে বোটিংও করতে পারেন । সন্ধ্যার সময় লেকের মাঝে রঙিন ফাউন্টেইন এবং লাইট এন্ড সাউন্ড শো সমস্ত পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে । এই পার্কের পরিচর্যা মূলত টাটা স্টিল কর্তৃপক্ষ করে থাকেন ।

টাটা স্টিল জুওলজিকাল পার্ক -

Photo of জামশেৎজী টাটার স্মৃতি বিজড়িত শহর জামশেদপুর: শিল্প এবং প্রযুক্তি নগর by Deya Das

জুবিলী পার্ক পরিদর্শন করে জয়ন্তী সরোবর ধরে পায়ে হেঁটে পৌঁছে গেলাম চিড়িয়াখানা । এই চিড়িয়াখানা নির্মিত হয় ১৯৯৪ সালে মার্চের ৩ তারিখে। প্রায় ৬২ একর জমির উপর নির্মিত এই চিড়িয়াখানাটি সাফারি পার্ক হিসেবে পরিচিত ।

Photo of জামশেৎজী টাটার স্মৃতি বিজড়িত শহর জামশেদপুর: শিল্প এবং প্রযুক্তি নগর by Deya Das

এখানে বাঘ, সিংহ, জিরাফ ইত্যাদি পশু ছাড়াও অনেক বিলুপ্তপ্রায় পাখির সন্ধান পাবেন । বন্যপ্রাণপ্রেমী মানুষের জন্য এই জুওলজিকাল পার্কটি আদৰ্শ স্থান ।

নিক্কো আমিউজমেন্ট পার্ক -

Photo of জামশেৎজী টাটার স্মৃতি বিজড়িত শহর জামশেদপুর: শিল্প এবং প্রযুক্তি নগর by Deya Das

জুবিলী পার্ক লাগোয়া এই পার্কটি ছোট থেকে বড়ো সমস্ত মানুষের খুব পছন্দের। এখানে কলকাতার নিক্কোপার্কের মতো বেশ কয়েকটি রাইড রয়েছে । এখানে এসে মনে হল আমি আবার যেন ছোটবেলার দিন গুলোতে ফিরে গিয়েছি ।

জামশেদপুর কয়েন মিউজিয়াম -

Photo of জামশেৎজী টাটার স্মৃতি বিজড়িত শহর জামশেদপুর: শিল্প এবং প্রযুক্তি নগর by Deya Das

সমস্ত পার্ক গুলি দর্শন করে গাড়ি চেপে মিনিট ৫ এর দূরত্ব অতিক্রম করে পৌঁছে গেলাম এই মিউজিয়ামে। এখানে প্রায় ১২০০ দুর্লভ কয়েন সংরক্ষিত আছে। এছাড়াও ৩০০- ৪০০ শতকের বিশ্বের ক্ষুদ্রতম কয়েনও এই মিউজিয়ামে যত্নসহকারে সংরক্ষিত রয়েছে ।

মেরিন ড্রাইভ -

Photo of জামশেৎজী টাটার স্মৃতি বিজড়িত শহর জামশেদপুর: শিল্প এবং প্রযুক্তি নগর by Deya Das

মিউজিয়াম এবং পার্ক ঘুরতে ঘুরতে সন্ধ্যে হয়ে গিয়েছে। ফেরার পথে ড্রাইভার দাদা মেরিন ড্রাইভের রাস্তা ধরলেন। হ্যাঁ জামশেদপুরের মেরিন ড্রাইভের কথাই বলছি । প্রায় ৩মাইল লম্বা এই ন্যাশনাল হাইওয়েটি আসানবনি এবং জামশেদপুর শহরকে সংযোগ করেছে । খরকাই নদীতীর বরাবর এই হাইওয়েটি সন্ধ্যের সময় বেশ মোহনীয় লাগে । খরস্রোতা খরকাই নদীর সাথে একটু আলাপচারিতা সেরে ফিরে এলাম হোটেলে। রাতের ডিনার এর সঙ্গে সঙ্গেই জামশেদপুর ভ্রমণের প্রথমদিনের সমাপ্তি।

দ্বিতীয় দিন -

দলমা পাহাড় এবং অভয়ারণ্য -

Photo of জামশেৎজী টাটার স্মৃতি বিজড়িত শহর জামশেদপুর: শিল্প এবং প্রযুক্তি নগর by Deya Das

হোটেল থেকে সকালের প্রাতঃরাশ সেরে আবার বেড়িয়ে পড়লাম দলমা পাহাড় দর্শনের উদ্দেশ্যে । পাহাড়টি প্রধান শহর থেকে প্রায় ১০কিমি দূরে অবস্থিত । এই অভয়ারণ্যটি হাতিদের প্রধান বাসস্থান হিসেবে পরিচিত । সময়ের অভাবে আমরা গাড়ি সহযোগেই পাহাড় চড়ার সিদ্ধান্ত নিলাম । তবে আপনি চাইলে ট্রেক করে প্রকৃতির কোমল সৌন্দর্য এবং বন্যপশু দর্শন করতে করতে এই পাহাড় আরোহন করতে পারেন । এই পাহাড় ট্রেক করা যথেষ্ঠ সহজসাধ্য । গাড়ি সহযোগে গেলে ঝাড়খণ্ড বনদপ্তর কর্তৃপক্ষের অফিস থেকে একটি পারমিটের প্রয়োজন হবে। আর পারমিটের জন্য শুধুমাত্র আপনার নাগরিকত্বের প্রমাণপত্রই যথেষ্ট ।

Photo of জামশেৎজী টাটার স্মৃতি বিজড়িত শহর জামশেদপুর: শিল্প এবং প্রযুক্তি নগর by Deya Das

যাত্রা পথে বেশ কিছু হরিণ, নানান ধরণের পাখি এবং হাতির ও দেখা পেলাম। খাড়াই পাহাড় আর আঁকাবাঁকা পথ পেড়িয়ে পৌঁছে গেলাম দলমা পাহাড়ের শৃঙ্গতে, এখানে একটা ছোট্ট শিব মন্দির এবং হনুমান মন্দির রয়েছে । গাড়ি সহযোগে সম্পূর্ণ দলমা ভ্রমণে সময় লাগলো প্রায় ৩ঘণ্টার মতো এবং ট্রেক করে যাওয়া আসার জন্য একটা সম্পূর্ণ দিন সময় লেগে যাবে ।

প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি দলমা পাহাড়ে রাত্রিবাসের ও ব্যবস্থা রয়েছে ।অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমী মানুষ একবার এই পাহাড়ে রাত্রিবাসের প্ল্যানটা ট্রাই করে দেখতে পারেন ।

চান্ডিল ড্যাম -

Photo of জামশেৎজী টাটার স্মৃতি বিজড়িত শহর জামশেদপুর: শিল্প এবং প্রযুক্তি নগর by Deya Das

দলমা থেকে চান্ডিল ড্যামের দূরত্ব প্রায় ২৬ কিমি । সুবর্ণরেখা নদীর উপর গড়ে উঠেছে এই বাঁধটি । পর্যটনের উদ্দেশ্যে এখানে বোটিং এর ব্যবস্থা রয়েছে । রোমহর্ষক নৌকোবিহারের পর দুপুরের লাঞ্চটা সেরে নিলাম । এবার আমাদের গন্তব্য ডিমনা লেক ।

ডিমনা লেক -

Photo of জামশেৎজী টাটার স্মৃতি বিজড়িত শহর জামশেদপুর: শিল্প এবং প্রযুক্তি নগর by Deya Das

চান্ডিল ড্যাম পরিদর্শন করে প্রায় ঘণ্টা খানেক দূরত্ব অতিক্রম করে পৌঁছে গেলাম ডিমনা লেক । এই লেকটি প্রাকৃতিক ভাবে নির্মিত লেক নয় । টাটা স্টিল কোম্পানি নির্মিত এই লেকটি জামশেদপুরের বিখ্যাত পর্যটনস্থান গুলির মধ্যে অন্যতম । বিকেলের পড়ন্ত আলোকে লেকের চাকচিক্যের সঙ্গে পরিযায়ী পাখিদের দুষ্টুমি দেখতে বেশ অপরূপ লাগল।

Photo of জামশেৎজী টাটার স্মৃতি বিজড়িত শহর জামশেদপুর: শিল্প এবং প্রযুক্তি নগর by Deya Das

ডিমনা লেক দর্শন করে ফিরতে ফিরতে প্রায় সন্ধে হয়ে গিয়েছে । ফেরার পথে ঝাড়খণ্ডের বিখ্যাত লিট্টি চোখার স্বাদ চেখে দেখতে ভুলবেন না ।

তৃতীয় দিন -

হুডকো লেক

Photo of জামশেৎজী টাটার স্মৃতি বিজড়িত শহর জামশেদপুর: শিল্প এবং প্রযুক্তি নগর by Deya Das

রোববারের সকালের শীতের নরম আলো গায়ে মেখে পৌঁছে গেলাম হুডকো লেক ।এই লেকটি প্রধান শহর থেকে মাত্র ৯ কিমি দূরে অবস্থিত। চারিদিকে পাহাড় বেষ্টিত এই কৃত্রিম লেকটির দৃশ্যটা বেশ মনোরম । আর শীতের দিনে ছুটির সকালে স্থানীয় মানুষেরা পিকনিকের জন্য এই স্থানটিকে বেছে নেন । এই লেকটি প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত দর্শকদের জন্য খোলা থাকে ।

ভাটিয়া পার্ক -

Photo of জামশেৎজী টাটার স্মৃতি বিজড়িত শহর জামশেদপুর: শিল্প এবং প্রযুক্তি নগর by Deya Das

হোটেল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে জানতে পেরে পৌঁছে গেলাম ভাটিয়া পার্ক । চারিদিকে সবুজে ঘেরা এই পার্কটি খরকাই নদীর তীরে অবস্থিত । আর হোটেলের খুব কাছেই এই পার্কের অবস্থান, তাই কোনোভাবেই এই পার্ক দর্শনের সুযোগটা মিস করলাম না । এককথায় বলতে গেলে এই পার্কটি জুবিলি পার্কের মিনি ভার্সন ।

পি.এম মল -

Photo of জামশেৎজী টাটার স্মৃতি বিজড়িত শহর জামশেদপুর: শিল্প এবং প্রযুক্তি নগর by Deya Das

আমার কিছু বন্ধু বান্ধব এর থেকে এই মল সম্পর্কে জানতে পারি । আর তাই দুপুরের লাঞ্চটা এই মলের ফুড কোর্টে করলাম । ফ্রাইড রাইস, চিকেন এবং স্টার্টার এর সঙ্গে দুপুরের লাঞ্চটা শেষ করে শপিং মলটা ঘুরে দেখলাম । মলটা বেশ সাজানো গোছানো এবং পরিচ্ছন্ন । এই শপিং মলে ব্র্যান্ডেড বিপণী ছাড়াও মাল্টিপ্লেক্স, গেম জোন সমস্ত কিছুই উপলব্ধ আছে ।

মল ঘুরে ফিরে এলাম হোটেলে; এবার ফেরার পালা । গাড়ি ধরে পৌঁছে গেলাম টাটানগর স্টেশন । স্টেশন থেকে বিকাল ৫ টার জনশতাব্দী ট্রেন ধরে ফিরে এলাম কলকাতায় ।

কোথায় থাকবেন -

জামশেদপুর শহরে বিভিন্ন মূল্যের হোটেল উপলব্ধ রয়েছে, যার খরচ ১০০০ টাকা থেকে ৪০০০ টাকার মধ্যে ।

কখন যাবেন -

জামশেদপুর ভ্রমণের জন্য ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি মাসটি শ্রেষ্ঠ সময় ।

কীভাবে যাবেন -

ট্রেনে - কলকাতা থেকে টাটানগর (জামশেদপুর) যাওয়ার জন্য হাওড়া থেকে বেশ অনেকগুলি ট্রেন উপলব্ধ আছে ।

•বারবিল জনশতাব্দী এক্সপ্রেস হাওড়া থেকে ছাড়ে প্রতিদিন সকাল ৬.২০ মিনিটে ।

• গীতাঞ্জলি এক্সপ্রেস হাওড়া থেকে ছাড়ে প্রতিদিন দুপুর ১.৫০ মিনিটে ।

• স্টিল এক্সপ্রেস হাওড়া থেকে ছাড়ে প্রতিদিন বিকাল ৫.২০ মিনিটে ।

এছাড়াও বেশ কিছু সাপ্তাহিক ট্রেন ও রয়েছে ।

টাটানগর স্টেশন থেকে অটো বা ক্যাব বুক করে পৌঁছে যেতে পারেন জামশেদপুরে আপনার বুক করা হোটেলটিতে। স্টেশন থেকে মূল শহরের দূরত্ব প্রায় ১০ কিমি মতো।

বিমানে - যেহেতু জামশেদপুরের নিজস্ব কোনো বিমানবন্দর নেই তাই আপনাকে রাঁচি বিমানবন্দর নেমে, সেখান থেকে গাড়ি ভাড়া করে প্রায় ৩ ঘণ্টার দূরত্বে পৌঁছে যেতে পারেন জামশেদপুর ।

সড়কপথে - কলকাতা থেকে গাড়ি সহযোগে খড়গপুর - ঝাড়গ্রাম -ঘাটশিলা জঙ্গলমহলের রাস্তা ধরে ৬ ঘণ্টার দূরত্বে পৌঁছে যেতে পারেন গন্তব্যে ।

পাহাড়, সমুদ্র বা অভয়ারণ্য ভ্রমণ তো অনেক হলো এবার ভারতের মালভূমি অঞ্চল পরিদর্শন করা যায় কী?

নিজের বেড়ানোর অভিজ্ঞতা ট্রিপোটোর সঙ্গে ভাগ করে নিন আর সারা বিশ্ব জুড়ে অসংখ্য পর্যটকদের অনুপ্রাণিত করুন।

বিনামূল্যে বেড়াতে যেতে চান? ক্রেডিট জমা করুন আর ট্রিপোটোর হোটেল স্টে আর ভেকেশন প্যাকেজে সেগুলো ব্যবহার করুন।