পশ্চিমবঙ্গের উত্তরে পাহাড় এবং দক্ষিণে সমুদ্র সৈকত দিয়ে বেষ্টিত, কিন্তু বিবিধের মাঝেও একটা সূক্ষ্ম ঐক্যের বন্ধনে আবদ্ধ এই রাজ্যটি। এমনকি এই রাজ্যটির রাজধানী শহর কলকাতাও যে কোনও ভ্রমণপিপাসু মানুষকে নিত্য নতুন ভ্রমণের অভিজ্ঞতার মাধুর্যে মুগ্ধ করবেই। পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যর প্রতিফলিত রূপ এই শহরের শিল্প, স্থাপত্য এবং খাদ্যসংস্কৃতিতেও লক্ষ করা যায়।
ভারতের প্রাণকেন্দ্র এই রাজ্যটিকে প্রাণভরে উপভোগ করার জন্য ৫ দিন যথেষ্ট নয়। তবুও কাজের ফাঁকে ৫টা দিন পশ্চিমবঙ্গ ভ্রমণ আপনার জন্য এক্কেবারে নতুন স্বাদের ভ্রমণের একমাত্র ডেস্টিনেশন হতে পারে। চট করে ব্লগটা পড়ে ফেলুন আর বেড়ানোর পরিকল্পনা করে ফেলুন, বলাই বাহুল্য, ৫ দিনের এই প্ল্যানটা কিন্তু বেশ এক্সসাইটিং হতে চলেছে।
কীভাবে যাবেন - রেল পথ কিংবা সড়কপথের সাহায্যে খুব সহজেই আপনি পাহাড়ের চেনা-অচেনা রাস্তা ধরে খুব সহজেই পৌঁছে যেতে পারেন উত্তরবঙ্গের বিখ্যাত ভ্রমণস্থলগুলোতে।
ভারতের অন্যান্য রাজ্য থেকে উত্তরবঙ্গ ভ্রমণ করতে চাইলে বিমানে চেপে পৌঁছে যেতে পারেন বাগডোগরা বিমানবন্দর অথবা ট্রেনে করে পৌঁছে যেতে পারেন শিলিগুড়ি রেল স্টেশন।
কী কী দেখবেন আর কী কী করবেন
কাজের ফাঁকে ছুটির আনন্দে মেতে ওঠার জন্য নর্থ বেঙ্গল আদৰ্শ স্থান। ছবির মতো দৃশ্যপট, স্থানীয় মানুষের আতিথেয়তা, মিষ্ট স্বভাব আপনাকে মুগ্ধ করবেই।
প্রথম দিন -
শিলিগুড়ি রেল স্টেশন থেকে সড়কপথে মিরিক পৌঁছতে সময় লাগবে প্রায় ১ঘণ্টা ৩০ মিনিট। শান্ত নির্জন পাহাড়ের কোলে অবস্থিত মিরিকে রয়েছে অসাধারণ সুন্দর দৃশ্যপট, এবং সুমিষ্ট আবহাওয়া। মিরিকের আবহাওয়া ১৫ ডিগ্রি থেকে ৩০ ডিগ্রি মধ্যে থাকে। একদিনের ট্রিপে এই ছোট্ট শহরটির উদ্দেশ্যে ভ্রমণের প্ল্যান করে আসতে পারেন।
সকাল ৯.০০- সকাল ১০.০০
মিরিক লেকের কাছে পার্ক রেস্টুরেন্ট-এ প্রাতঃরাশটা সেরে নিতে পারেন। এখানে ইংরেজি ব্রেকফাস্ট থেকে ভারতীয়, সমস্ত রকমের খাবারই উপলব্ধ আছে । তবে প্রকৃতিকে উপভোগ করতে করতে রেস্তোরাঁর খাবার টেস্ট করার জন্য জানলার ধারের সিটটা বেছে নিতে পারেন।
সকাল ১০.০০ - দুপুর ১২.০০
পর্যটকদের অন্যতম প্রধান ভ্রমণ স্থানটি হল মিরিক লেক। প্রায় ১.২৫ কিমি দীর্ঘ এই লেকটি সুমেন্দু লেক হিসাবেও পরিচিত। একটা রৌদ্রস্নাত দিনে বন্ধুবান্ধব বা পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সবুজ জঙ্গলে মোড়া এই লেক উপভোগ করার আনন্দটা এক্কেবারে অন্যরকম হতে চলেছে।
দুপুর ১২.০০- দুপুর ১.০০
মিরিক লেক পরিদর্শন করে পৌঁছে যান চখোর লিং মনেস্ট্রি। এই মনেস্ট্রি থেকে পাহাড় বেষ্ঠিত প্রকৃতির রূপটা বেশ মোহনীয়।
দুপুর ১.০০ - দুপুর ২.০০
শহর থেকে একটু দূরে পৌঁছে যেতে পারেন টিং-লিং ভিউ পয়েন্টে। প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি, স্থানীয় চা বাগানের নাম অনুসারেই এই ভিউ পয়েন্টের নামকরণ করা হয়েছে। মনেস্ট্রি থেকে মাত্র ৮কিমি অদূরে অবস্থিত এই টিং-লিং ভিউ পয়েন্ট। এই ভিউ পয়েন্ট থেকে চা বাগান সহ মেঘের অনাবিল যাতায়াতের প্রত্যক্ষদর্শী থাকতে পারেন আপনিও।
দুপুর ২.০০- সন্ধে ৬.০০
টিং-লিং ভিউ পয়েন্ট থেকে মাত্র ২৬ কিমি দূরত্ব অতিক্রম করে পৌঁছে যান তাশী তাকেই রেস্টুরেন্টে। এখানে দুপুরের লাঞ্চটা সেরে বেড়িয়ে পড়ুন দার্জিলিং-এর উদ্দেশ্যে।
সন্ধেবেলা
সন্ধে ৬.০০- রাত্রি ৮.০০
তিব্বতীয় উদ্বাস্তু মানুষদের উদ্দেশ্যে নির্মিত তিব্বতীয় রিফিউজি সেলফ হেল্প সেন্টার ঘুরে আসতে পারেন। এখানে তিব্বতীয় সংস্কৃতি সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করা ছাড়াও তিব্বতীয় মানুষের সুসজ্জিত হস্তশিল্পগুলোকে স্মারক হিসেবে কিনে নিতে পারেন।
রাত ৮.০০ - রাত ৯.০০
পেনাং রেস্টুরেন্ট থেকে রাতের ডিনারটা সেরে নিতে পারেন। এখানে নেপালি, থাই, তিব্বতীয় সমস্ত ধরণের খাবার উপলব্ধ আছে। এই রেস্তোরাঁটি মূলত স্থানীয় খাদ্যগুলোর জন্যই বিখ্যাত। এবারে আপনার গন্তব্য কিন্তু কার্শিয়াং।
দ্বিতীয় দিন
পশ্চিমবঙ্গের শৈলশহরগুলোর মধ্যে অন্যতম সুন্দর শৈলশহর হল কার্শিয়াং। পাহাড়বেষ্ঠিত চা বাগানে মোড়া এই শৈলশহরে সাদা অর্কিডের বাগানটাও দেখে আসতে পারেন। একটা ছোট্ট ছুটির সপ্তাহ কাটানোর জন্য কার্শিয়াং আদর্শ ভ্রমণ স্থান।
সকাল ৯.০০ - ১০.০০
সকালে কার্শিয়াং সার্কিট হাউসে স্থানীয় খাবার সহযোগে প্রাতঃরাশ সেরে নিয়ে দর্শনীয় স্থানগুলোর উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে পড়ুন।
সকাল ১০.০০ - সকাল ১১.০০
কার্শিয়াং সার্কিট হাউস থেকে মাত্র ১০ কিমি দূরত্ব অতিক্রম করে পৌঁছে যান অম্বটিয়া টি-গার্ডেন। এই চা বাগানটি লিকার চা থেকে দুধ চা এমনকি গ্রিন-টি এর জন্যও বেশ নামজাদা।
সকাল ১১.০০- দুপুর ১২.০০
সার্কিট থেকে মাত্র ৭.১কিমি দূরত্ব অতিক্রম করে পৌঁছে যেতে পারেন ঈগাল ক্র্যাগ ভিউ পয়েন্টে ।এখানে আপনি চা বাগান ছাড়াও অন্যান্য চাষের জমির প্রত্যক্ষদর্শী থাকতে পারেন।
দুপুর ১২.০০ - দুপুর ১.০০
ঈগাল ক্র্যাগ থেকে মাত্র ২.৪ কিমি দূরত্ব অতিক্রম করে পৌঁছে যান কোছরন প্লেস-এ। প্রকৃতির সৌন্দর্যকে উপলব্ধি করা ছাড়াও এই ভিন্টেজ বাড়িটিতে দুপুরের লাঞ্চ করার প্ল্যানটাও বেশ রোমাঞ্চকর।
দুপুর ১.০০ - দুপুর ২.০০
লাঞ্চ সেরে মাত্র ৭.৪ কিমি অদূরে পৌঁছে যান গিদ্ধে পাহাড় ভিউ-পয়েন্টে। এই ভিউ পয়েন্টটিতে দর্শণার্থীদের জন্য সারাদিন যে কোনও সময়ে বিনামূল্যে ভ্রমণের অনুমতি আছে। এখান থেকে দূরে ঝলমলে রঙিন আলোয় রাঙা হিমালয় দর্শন মনের মধ্যে একটা অনুভূতির সৃষ্টি করে।
দুপুর ২.০০ - বিকাল ৪.০০
কার্শিয়াং অঞ্চলটি মূলত ডো-হিল কে কেন্দ্র করে গঠিত। এখানে সবুজে ঘেরা অরণ্য এবং পাহাড় ছাড়াও কয়েকটি ঐতিহাসিক ভ্রমণ স্থান, পার্ক এবং মিউজিয়াম রয়েছে। এখান থেকে গিদ্ধে পাহাড় ভিউ পয়েন্টের দূরত্ব মাত্র ৯.৬ কিমি। এই ভিউ পয়েন্ট ছাড়াও আপনি প্রাচীন স্থাপত্যগুলো দর্শনের অংশীদার হতে পারেন।
বিকাল ৪.০০ - বিকাল ৫.০০
গিদ্ধে পাহাড় ভিউ পয়েন্ট থেকে ৬.৬ কিমি দূরে অবস্থিত আরেকটি দর্শনীয় স্থান সেন্ট মেরি হিল চার্চ পরিদর্শন করে আসতে পারেন।
সন্ধ্যেবেলা-
বিকাল ৫.০০- সন্ধে ৬.০০
চা বাগান অঞ্চলের সুস্বাদু চা-এর স্বাদ পেতে পৌঁছে যান মারগারেট ডেক টি-লাউঞ্জে। এই রেস্তোরাঁটি চার্চ থেকে ৬কিমি দূরে অবস্থিত। সুস্বাদু খাবারের সাথে সাথে পাহাড়ের কোলে প্রকৃতির নানান বৈচিত্রের সান্নিধ্য পাওয়ার জন্য এই জায়গাটি আদৰ্শ।
সন্ধ্য ৭.০০
একটা দিন কার্শিয়াং ভ্রমণের পর এবার দার্জিলিং ফিরে যাওয়ার পালা।কার্শিয়াং থেকে দার্জিলিং এর দূরত্ব ২২কিমি।
সন্ধ্যে ৮.০০ - রাত ৯.০০-
দার্জিলিং ফিরে রাতের ডিনার সেরে নিন গিলেনারি রেস্টুরেন্ট থেকে, এখানে সমস্ত ধরণের খাবার উপলব্ধ আছে। প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি, এই রেস্তোরাঁটি প্রায় ১০০ বছরের প্রাচীন। ঐতিহ্যবাহী এই রেস্তোরাঁটি দার্জিলিং শহরের অন্যতম আকর্ষণ।
তৃতীয় দিন
প্রায় ৩,০০০বর্গ কিমি অঞ্চল জুড়ে দার্জিলিং শৈল শহরটি সৌন্দর্যের আভরণে সুসজ্জিত। টয় ট্রেনের দিগন্ত বিস্তৃত শব্দ থেকে চা বাগান কিংবা হিমালয় দর্শন সমস্ত কিছুই পর্যটকদের কাছে বেশ মনোরঞ্জক।
ভোর ৪.০০- সকাল ৮.০০
সকালের সোনালী আভায় রঞ্জিত হিমালয়ের দর্শন পেতে পৌঁছে যেতে পারেন টাইগার হিল -এ। দার্জিলিং থেকে এই টাইগার হিল-এর দূরত্ব প্রায় ১১কিমি। টাইগার হিলের ভিউ পয়েন্ট থেকে সকালে হিমালয়ের থেকে সুপ্রভাত অভিবাদন পেতে এখানে আপনাকে আসতেই হবে।
সকাল ৮.০০- সকাল ৯.০০
সকালে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে হিমালয় দর্শন করার পর স্থানীয় কোনও রেস্তোরাঁ থেকে ব্রেকফাস্টটা সেরে নিন।
সকাল ৯.০০- সকাল ১০.০০
দিনের শুরু করতে পারেন মে-ফেয়ার এর দ্য- মঙ্গোলিয়া রেস্তোরাঁ থেকে। এখানে সমস্ত রকম সুস্বাদু এবং জিভে জল আনা ব্রেকফাস্ট উপলব্ধ আছে ।
সকাল ১০.০০- সকাল ১১.০০
পর্বত আরোহন যদি আপনার একান্ত ইচ্ছা হয়ে থাকে, তাহলে দার্জিলিং ভ্রমণের প্রথমেই হিমালয়ান মাউন্টেনিং ইনস্টিটিউট থেকে পর্বত আরোহন শিখে নিতে পারেন। দার্জিলিং-এর ব্রেকফাস্ট প্লেস থেকে মাত্র ১ কিমি দূরে অবস্থিত এই ইনস্টিটিউটটি। প্রসিদ্ধ পর্বত আরোহীদের ব্যবহার্য সমস্ত রকম প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম আজও এখানকার সংগ্রহশালায় সংরক্ষিত আছে।
সকাল ১১.০০- দুপুর ১২.০০
দার্জিলিং ভ্রমণে গিয়ে রোপওয়ে ট্যুরটা কিন্তু একদম মিস করবেন না । HMI থেকে মাত্র ৩কিমি দূরে অবস্থিত রঙ্গিত ভ্যালি প্যাসেজ-এর কেবল কার সার্ভিসটি। এই রোপওয়ে চেপে চা বাগানের সৌন্দর্য উপভোগ করতে বেশ রোমাঞ্চকর লাগে। এই রোপওয়ে সার্ভিসটি দর্শনার্থীদের জন্য সকাল ১০ টা থেকে বিকাল ৪.০০ টে পর্যন্ত খোলা থাকে। এই রোপওয়ে ভ্রমণের খরচ জনপ্রতি ৩৫০ টাকার মতো।
দুপুর ১২.০০- দুপুর ১.০০
রোপওয়ে থেকে মাত্র ১কিমি দূরে অবস্থিত পিস প্যাগোডা। এখান থেকেও হিমালয়ের অসাধারণ দৃশ্যর প্রত্যক্ষদর্শী থাকতে পারেন।
দুপুর ১.০০- দুপুর ২.০০
দার্জিলিং থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘার দর্শন পেতে পৌঁছে যেতে পারেন বাতাসিয়া লুপ। টয় ট্রেনে বসে এই সুন্দর প্রকৃতিকে ক্যামেরাবন্দী করতে কিন্তু একদম ভুলবেন না।
দুপুর ২.০০ - দুপুর ৩.০০
বৌদ্ধ মনাস্ট্রি দর্শনের অধ্যাত্ম দর্শনের সঙ্গে একাত্ম হতে চাইলে বাতাসিয়া লুপ থেকে মাত্র ২.০০ কিমি অদূরে ঘুম মনাস্ট্রি পরিদর্শন করে আসতে পারেন।
বিকাল ৩.০০- বিকাল ৪.০০
ঘুম মনাস্ট্রি থেকে পৌঁছে যান গ্যাত্তি ক্যাফে। প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতে বিকালে সুস্বাদু স্ন্যাক্স টেস্ট করার জন্য এই জায়গাটি এক্কেবারে আদর্শ।
বিকাল ৪.০০- রাত ৯.০০
দার্জিলিং শহরের একমাত্র প্রাণকেন্দ্র হল দার্জিলিং মল। এই মলটি চৈরাস্তা নামেও পরিচিত। খাবার থেকে কেনাকাটা সবকিছুর একটি ঠিকানা হল এই দার্জিলিং মল। রাতে ডিনারের জন্য এখানের ফিউস্তা রেস্টুরেন্ট কে বেছে নিতে পারেন ।এই রেস্টুরেন্টে এই অঞ্চলের স্থানীয় খাবারের স্বাদটা চেখে দেখতে কিন্তু ভুলবেন না।
চতুর্থ দিন
কালিম্পং
সকাল ৯.০০ - সকাল ১১.০০
সকালে দার্জিলিং-এ প্রাতঃরাশ সেরে একটা ছোট গাড়ি চেপে ৫০ কিমি দূরেই পৌঁছে যান কালিম্পং। পাহাড় ও চা বাগানে মোড়া এই শহরটিতে যেতে সময় লাগবে ২ঘণ্টার মতো।
সকাল ১১.০০- দুপুর ১২.০০
কালিম্পঙ এর দর্শনীয় স্থান দূরপিন-দারা পাহাড়, দূরপিন মনেস্ট্রি ইত্যাদি দর্শন করে নিন। মনেস্ট্রি থেকে দূরের পাহাড়েকে প্রত্যক্ষ করতে কিন্তু বেশ রোমাঞ্চকর লাগে।
দুপুর ১২.০০- দুপুর ২.০০
মনাস্ট্রি থেকে মাত্র ৫কিমি দূরে অবস্থিত এই অঞ্চল থেকে আপনি অনেকগুলো ভিউ পয়েন্টের সাক্ষী থাকতে পারেন।
দুপুর ২.০০ - দুপুর ৩.০০
কালিম্পং থেকে মাত্র ২কিমি দূরে অবস্থিত সুডস গার্ডেন রিট্রিট। এখানে দুপুরের আহার সম্পন্ন করে পৌঁছে যান হাটবাজার।
দুপুর ৩.০০ - বিকেল ৪.০০
গ্রামাঞ্চলের হাটের প্রত্যক্ষদর্শী থাকতে পৌঁছে যেতে পারেন হাট বাজার। ইচ্ছা করলে, স্থানীয় বিপণীগুলো থেকে কেনাকাটিও সেরে নিতে পারেন।
বিকেল ৪.০০
কালিম্পং থেকে এবার বেড়িয়ে পড়ুন লোলেগাঁও এর উদ্দেশ্যে। কালিম্পং জেলার দৃশ্যসদৃশ একটি ভ্রমণ স্থান হল লোলেগাঁও।কালিম্পঙ থেকে এই ছোট্ট গ্রামটির দূরত্ব প্রায় ২৮কিমি। এই স্থানটি এখনও তেমনভাবে পর্যটকদের নজরবন্দি হতে পারেনি, তাই ভ্রমণের জন্য লোলেগাঁও আদৰ্শ।
পঞ্চম দিন
সকাল ৯.০০ - সকাল ১০.০০
লোলেগাঁও-এর অরণ্যের সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতে ট্রি - ফার্ন রিসর্ট থেকে প্রাতঃরাশ সেরে ফেলুন।
সকাল ১০.০০- সকাল ১১.০০
রিসোর্ট থেকে মাত্র ৭৫০ মিটার দূরত্ব অতিক্রম করে হেঁটেই পৌঁছে যেতে পারেন বোখিম খাসমহল-এর ক্যানপি ওয়াক কাফর। এখানে কাঠের ঝুলন্ত ব্রিজ পরিদর্শন করে আসতে কিন্তু একদম ভুলবেন না ।
সকাল ১১.০০- দুপুর ১.০০
লাভা থেকে মাত্র ৫০ কিমি দূরত্ব অতিক্রম করে পৌঁছে যান লোলেগাঁও।
দুপুর ১.০০- দুপুর ২.০০
মনাস্ট্রির পবিত্রতায় মুগ্ধ হতে চাইলে ঘুরে আসতে পারেন কাগয়ু ঠেকছেন লিং মনেস্ট্রি।
দুপুর ২.০০- দুপুর ৩.০০
লোলেগাঁওতে লাঞ্চের জন্য নাথুলা ফরেস্ট ক্যান্টিনকে বেছে নিতে পারেন। মনেস্ট্রি থেকে এই ক্যান্টিনের দূরত্ব ৮৫০ মিটার।
বিকাল ৩.০০- সন্ধে ৫.০০
অভয়ারণ্য, বন্যপ্রাণ এবং অচেনা গাছেদের সাথে পরিচয় করতে পৌঁছে যেতে পারেন নেওরা ভ্যালি ন্যাশনাল পার্ক। ক্যান্টিন থেকে এই অভয়ারণ্যর দূরত্ব প্রায় ১.৬ কিমি। এই ন্যাশনাল পার্কে আপনি সফারি ও ট্রাই করে দেখতে পারেন।
বিকাল ৫.০০- বিকাল ৬.০০
বন্যপ্রাণের সাথে সাক্ষাৎ করে মাত্র ৬.১কিমি দূরে চাঙ্গেই জলপ্রপাত পরিদর্শন করে আসতে পারেন। জলপ্রপাতের প্রবহমানতার সঙ্গে কাঞ্চনজঙ্ঘার দর্শন পেয়ে যাবেন।
সন্ধে ৬.০০ - রাত ৯.৩০
লাভা এবং লোলেগাঁও ভ্রমণ করে ৮০ কিমি দূরত্ব অতিক্রম করে পৌঁছে যান দার্জিলিং।
রাত ৯.৩০- রাত ১০.৩০
আপনার এই দিন পাঁচেকের ট্রিপটি শেষ করতে পারেন দার্জিলিঙের গ্ল্যানারি বেকারি, রেস্টুরেন্ট এন্ড পাব থেকে ডিনার সেরে।
৫দিনের নর্থ বেঙ্গল ভ্রমণ কেমন লাগলো কমেন্ট বাক্সে লিখে জানাতে কিন্তু একদম ভুলবেন না ।