নস্টালজিয়ার আদরে বাঁধা পড়েছে কলকাতার এই সিনেমাহলগুলি...

Tripoto
Photo of নস্টালজিয়ার আদরে বাঁধা পড়েছে কলকাতার এই সিনেমাহলগুলি... 1/8 by Surjatapa Adak

বাঙালিদের বরাবরই শিল্প, নাটক, সিনেমার প্রতি একটা আত্মিক টান রয়েছে । তাই এই ধরণের সংস্কৃতির সঙ্গে বাঙালীদের ঐকান্তিকযোগ প্রাচীনকালেও ছিল, এখনও রয়েছে । একটু ভাল করে খেয়াল করলে বোঝা যায়, এই থিয়েটার বা সিনেমা হলগুলি আজও কলকাতার প্রাচীনত্বকে বহন করে চলেছে । আপনি কি জানেন ভারতে প্রথম হল নির্মিত হয়েছিল এই কলকাতাতেই । সিনেমার প্রতি এই শহরের প্রেম আদি এবং অকৃত্রিম । আগের মতো আজও সদ্য মুক্তি পাওয়া সিনেমা দেখার জন্য শহরবাসীরা সিনেমাহলেই ভিড় করেন ।

আধুনিক প্রযুক্তিবিদ্যার সমন্বয়ে বর্তমান দিনে কলকাতায় সিনেমা হলের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে । সিনেমাপ্রেমী মানুষদের সিনেমা দেখার অভিজ্ঞতাটা আগের চেয়ে আজ অনেকটাই পরিণত । ডলবি সাউন্ড, 3D মুভি,একই জায়গায় অনেক গুলি পর্দায় ছবি দেখার ধারণা, নির্দিষ্ট সংখ্যক দর্শকাসন, অনলাইন টিকিটের ব্যবস্থা সব মিলিয়ে সম্পূর্ণ সিনেমাহলের ধারণার আমূল পরিবর্তন ঘটেছে ।

সেই কারণেই মাল্টিপ্লেক্সের যুগে আজ সিনেমা হলের ব্যবসা জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে । কলকাতার রাজপথ জুড়ে এমন অনেক থিয়েটার হল বা সিনেমা হল ছিল বা আছে, যা দর্শকদের দ্বারা আকৃষ্ট না হতে পেরে কিংবা মাল্টিপ্লেক্সে পরিণত না হওয়ায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তবে এর মধ্যে কিছু সংখ্যক সিনেমাহল নবরূপে সেজে উঠেছে, আবার কিছু শপিং মলেও পরিণত হয়েছে ।

কলকাতা শহরের এই সিনেমাহলগুলি হল -

১. চ্যাপলিন সিনেমা -

Photo of নস্টালজিয়ার আদরে বাঁধা পড়েছে কলকাতার এই সিনেমাহলগুলি... 2/8 by Surjatapa Adak

ভারতের প্রথম নির্মিত সিনেমা হলটি কলকাতার চ্যাপলিন সিনেমা। হগ স্ট্রিট বা চৌরঙ্গীতে অবস্থিত এই সিনেমাহলটি ১৯০৭ সালে জামশেদজী ফ্রেমজি মদন নির্মাণ করেন । তবে আধুনিক যুগে তেমন জনপ্রিয়তা না পাওয়ায় ২০১৩ সালে কলকাতা মিউনিসিপাল কর্পোরেশন এই সিনেমাহলটি ভেঙ্গে ফেলেন ।

২. প্যারাডাইস সিনেমা -

Photo of নস্টালজিয়ার আদরে বাঁধা পড়েছে কলকাতার এই সিনেমাহলগুলি... 3/8 by Surjatapa Adak

বেন্টিক স্ট্রিটে অবস্থিত প্যারাডাইস সিনেমা হলটি ১৯৪৩ সালে নির্মাণ করা হয় । তৎকালীন উপনিবেশিক শাসনের প্রতিচ্ছবি এই সিনেমা হলে খুঁজে পাওয়া যায় । প্রায় ৭৩০টি দর্শকাসন সমৃদ্ধ এই সিনেমা হলটি আধুনিক ডলবি সাউন্ড সহযোগে মাল্টিপ্লেক্সে পরিণত করা হয়েছে । কলকাতা শহরে একমাত্র এই সিনেমা হলটি প্রাচীন এবং আধুনিকত্বের সাক্ষীবহ ।

৩. গ্লোব সিনেমা -

Photo of নস্টালজিয়ার আদরে বাঁধা পড়েছে কলকাতার এই সিনেমাহলগুলি... 4/8 by Surjatapa Adak

প্রাচীনকালে কলকাতা শহরের একমাত্র এই সিনেমা হলেই ইংরেজি সিনেমা প্রদর্শন করা হত । দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ও নাকি সৈন্যরা সিনেমা দেখার জন্য গ্লোব সিনেমাকে বেছে নিতেন । বর্তমানে এই সিনেমা হলটি শপিং মল সহযোগে দুইটি পর্দার মাল্টিপ্লেক্সে পরিণত হয়েছে ।

৪. এলিট সিনেমা -

Photo of নস্টালজিয়ার আদরে বাঁধা পড়েছে কলকাতার এই সিনেমাহলগুলি... 5/8 by Surjatapa Adak

একসময় এলিট সিনেমা হলটি 20th century Fox এর অধীনস্থ ছিল । রাজ কাপুর, অমিতাভ বচ্চন, শাহরুখ খানের মতো বলিউডের বিখ্যাত ব্যক্তিত্বরাও এখানে আসতেন । কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, এই সিনেমা হলটি নিজের গৌরব রক্ষা করতে পারেনি ।

৫. ষ্টার থিয়েটার -

Photo of নস্টালজিয়ার আদরে বাঁধা পড়েছে কলকাতার এই সিনেমাহলগুলি... 6/8 by Surjatapa Adak

সমস্ত সংস্কৃতিপ্রেমী মানুষ ষ্টার থিয়েটারের সঙ্গে পরিচিত ।একসময় এই থিয়েটারের ভবিষ্যত নিয়ে জল ঘোলা হলেও, শহরের মানুষ এই ঐতিহাসিক থিয়েটারটিকে রক্ষা করার পক্ষে অনড় থেকেছেন । তাই দর্শকদের মনোরঞ্জন করতে এই থিয়েটারটি আবারও নতুন আঙ্গিকে সেজে উঠেছে।

৬. মেট্রো সিনেমা -

Photo of নস্টালজিয়ার আদরে বাঁধা পড়েছে কলকাতার এই সিনেমাহলগুলি... 7/8 by Surjatapa Adak

জহরলাল নেহেরু রোডে অবস্থিত মেট্রো সিনেমা হলটি একসময় বেশ জনপ্রিয় ছিল । এই সিনেমা হলটি ১৯৩৫ সালে মেট্রো গোল্ডেওন মেয়রের নির্মাণ করেন । বেশ কিছু বছর ধরে এই সিনেমাটি বন্ধ হয়ে পড়েছিল । বর্তমানে এই মেট্রো সিনেমা হলটি শপিং মল সহযোগে মেট্রো আইনক্সে পরিণত হয়েছে ।

৭. রক্সি সিনেমা -

Photo of নস্টালজিয়ার আদরে বাঁধা পড়েছে কলকাতার এই সিনেমাহলগুলি... 8/8 by Surjatapa Adak

আপনি কী জানেন একসময় রক্সি, অপেরা হাউস হিসেবে পরিচিত ছিল। পরবর্তী কালে সিনেমা হলে পরিণত হয় । একসময় সুভাষ চন্দ্র বোসও এখানে সিনেমা দেখতে আসতেন । এখন ৭৩০টি দর্শকাসন সমৃদ্ধ শীততাপ নিয়ন্ত্রিত এই সিনেমা হলটি ডলবি সাউন্ড এবং 2 কে প্রজেকশন সহযোগে আজও সচল রয়েছে ।

আপনার শহরেও কি এমন সিনেমাহলের বিবর্তন যাত্রার ইতিহাস রয়েছে? তাহলে সেই কাহিনিগুলি ট্রিপোটো বাংলার সাথে ভাগ করে নিতে কিন্তু ভুলবেন না....

নিজের বেড়ানোর অভিজ্ঞতা ট্রিপোটোর সঙ্গে ভাগ করে নিন আর সারা বিশ্ব জুড়ে অসংখ্য পর্যটকদের অনুপ্রাণিত করুন।

বিনামূল্যে বেড়াতে যেতে চান? ক্রেডিট জমা করুন আর ট্রিপোটোর হোটেল স্টে আর ভেকেশন প্যাকেজে সেগুলো ব্যবহার করুন।