পৃথিবীব্যাপী জীবন্ত আগ্নেয়গিরির সংখ্যা প্রায় ১৫০০টি, কিন্তু সমগ্র দক্ষিণ এশিয়াতে খুঁজে পাবেন একটিমাত্র। কিন্তু তার থেকেও বড় কথা, আমাদের ভারতবর্ষেই আছে একটি জীবন্ত আগ্নেয়গিরি।
আগ্নেয়গিরি ঘুরিয়ে দিতে পারে ইতিহাসের মোড়
মহাজাগতিক গ্রহাণুপুঞ্জ পৃথিবীর বুকে আছড়ে পড়া থেকে রক্ষা করতে আছে বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি। এমনকি জলবায়ুর চূড়ান্ত অপ্রত্যাশিত ব্যবহার বা গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের হাত থেকে বাঁচার উপায় সম্পর্কেও বিজ্ঞানীরা বেশ আশাবাদীই বলতে হবে। কিন্তু জীবন্ত আগ্নেয়গিরির ভয়ঙ্কর অগ্ন্যুত্পাত এর মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের সামনে আমরা একেবারেই অপ্রস্তুত। এর কোনও পূর্বপরিকল্পিত ইঙ্গিত বা আভাস থাকে না প্রাকৃতিক নিয়মেই...
কিন্তু আগ্নেয়গিরির মধ্যে রয়েছে অনির্বচনীয় সৌন্দর্যের নিদর্শন
আসলে একটি জীবন্ত আগ্নেয়গিরির গা বেয়ে ট্রেক করে ওঠার মধ্যে লুকিয়ে আছে এক অদম্য আকর্ষণ।
আগ্নেয়গিরির শীর্ষে জীবন্ত কিছু থাকে না। এই এলাকা গাছপালাহীন, এমনকি পাখিরাও আগ্নেয়গিরিদের এড়িয়ে চলতেই পছন্দ করে থাকে। সালফার কুণ্ডের পাশে, আর জ্বলন্ত লাভার সমুদ্রের মধ্যে তাই প্রাণের একমাত্র চিহ্ন হয়ে ওঠে সাহসী পর্যটকেরাই।
ঠিক যেন কিছু মানুষের মধ্যে বেঁচে থাকার তাগিদের থেকেও অ্যাডভেঞ্চারের নেশা অনেক বেশি।
ভারতবর্ষের একমাত্র জীবন্ত আগ্নেয়গিরি
ব্যারেন দ্বীপ
ভারতবর্ষের একমাত্র জীবন্ত আগ্নেয়গিরি অবস্থিত ব্যারেন দ্বীপে। পোর্ট-ব্লেয়ার থেকে ১৩৫ কিমি এই দ্বীপ পূর্ব আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের অংশগত।
ব্যারেন আইল্যান্ড কীভাবে যাবেন:
ফরেস্ট ডিপার্টমেন্ট থেকে অনুমতি সংগ্রহের পরে বোটে করে ব্যারেন দ্বীপ পর্যন্ত যেতে পারবেন কিন্তু পর্যটকদের দ্বীপে পা রাখার অনুমতি দেওয়া হয় না। বিদেশি নাগরিকদেরও এখানে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয় না।
তবে পোর্ট ব্লেয়ার বা হ্যাভলক দ্বীপ থেকে সি-প্লেন ভাড়া করে আকাশপথে ঘুরে আস্তে পারেন ব্যারেন দ্বীপের উপর দিয়ে। পোর্ট ব্লেয়ার থেকে জনপ্রতি খরচ ৭৪৯৯ টাকা, হ্যাভলক থেকে ৪৯৯৯ টাকা।
এছাড়া আর একটি উপায়ে হল ডাইভ বোটের মাধ্যমে ব্যারেন দ্বীপের কাছে যাওয়া। সামুদ্রিক মান্টা রে দেখার জন্যেও ব্যারেন দ্বীপের কাছের সমুদ্র পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ জায়গা। আর দেখতে পাবেন কীভাবে অতীতের বিভিন্ন সময়ে এখানকার আগ্নেয়গিরি থেকে বেরিয়ে আসা লাভা সমুদ্রের তলার মাটিতে এক অদ্ভুত প্যাটার্নের সৃষ্টি করেছে।
এছাড়াও, সুলভে শংসাপত্র প্রাপ্ত স্কুবা ডাইভার হওয়ার জন্যে ঘুরে আসতে পারেন আন্দামানের নীল দ্বীপপুঞ্জ থেকে।
দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র জীবন্ত আগ্নেয়গিরিটি ১৭৭ বছর ধরে সুপ্ত থাকার পর ১৯৯৫ সালে আবার জেগে ওঠে। কিন্তু ব্যারেন দ্বীপে শেষ অগ্ন্যুত্পাত হয়েছে গত ১০ বছরের মধ্যেই।