ট্রেকিং বা পাহাড়ে ঘুরতে যেতে ভালোবাসেন? তাহলে আপনার জন্যে অনুপ্রেরণা হয়ে উঠতে পারে পি চিত্রান নামবুরিপাদের কাহিনি। ৯৯ বছর বয়সে তিনি তার ২৯তম হিমালয় ত্রিপটি সেরে এসেছেন! এবং ১০০ বছর বয়সে তাঁর ৩০তম হিমালয় অভিযান করার জন্যে তিনি এক পায়ে খাড়া। কেরালা শিক্ষা বিভাগের এই প্রাক্তন এডিশনাল ডিরেক্টর চিরকালই কিন্তু এডভেঞ্চারের নেশায় ঘর ছেড়ে বেরিয়ে পড়েছেন!
ডিসেম্বর মাসে ৯৯ বছর বয়সে পা দেওয়ার পর নামবুরিপাদ মহাশয় ১১৮ জনের একটি দলের সঙ্গে হিমালয়ের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। কেরালার থ্রিসুরের এই অধিবাসী প্রমাণ করে দিয়েছেন যে নিজের স্বপ্নের পথে এগিয়ে যাওয়ার সময় বয়স কোন বাধা হয়ে উঠতে পারে না।
ভ্রমণের প্রতি তাঁর এই ভালোবাসার পিছনে কী রহস্য লুকিয়ে?
নামবুরিপাদ বাবু জানান যে ছোটবেলায় তাঁর প্রতিবেশীর কাছ থেকে পাহাড় পর্বতের গল্প শুনেই তাঁর মনে তীর্থে যাওয়ার শ্রেষ্ঠ জায়গা হিসাবে হিমালয়ের আকর্ষণ ক্রমে বাড়তে থাকে। তাঁর প্রথম হিমালয় অভিযান হয়েছিল ১৯৫২ সালে। সমুদ্রোতট আর বালুকাবেলার পিছুটান ফেলে রেখে তিনি পৌঁছে গেছিলেন এভারেস্টের পাদদেশে। কিন্তু তাঁর প্রথম সফর একেবারেই সফল হয় নি। তা সত্ত্বেও কিন্তু তিনি থেমে যাননি, বার বার ফিরে গেছেন হিমালয়ের উদ্দেশ্যে। দ্য হিন্দু পত্রিকার রিপোর্ট অনুযায়ী তিনি তাঁর শততম বর্ষে ত্রিশতম অভিযানটি সম্পূর্ণ করতে চান।
কীভাবে তাঁর স্বপ্ন সত্যি হয়ে উঠল?
যে বয়সে মানুষ ঘরে বসে বিশ্রাম নিয়ে বা লাঠিতে ভর করে অল্প অল্প হেঁটে বেড়াতেই বেশি ভালোবাসেন, সেই জায়গায় এনার জীবনকাহিনি যেন প্রমাণ করে দেয় যে বয়স একটি সংখ্যা মাত্র। ওনার মতে এর পিছনে রহস্য হল জীবনের সব ব্যাপারে পরিমিতি বজায় রাখা, সেটাই তাঁকে এনে দিয়েছে পাহাড় পর্বত জয় করার শক্তি। দৈনন্দিন জীবনে, আহারে অভ্যাসে, কথা বলার ক্ষেত্রে সব কিছুই করা উচিত পরিমিত পরিমাণে। জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত এই শিক্ষাবিদের কিন্তু আজীবন বড় বড় স্বপ্ন দেখারই অভ্যেস। ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে, নিজের গ্র্যাজুয়েশান শেষ করার পরে তিনি একটি বিদ্যালয় স্থাপন করেন, যার দায়িত্ব তিনি পরবর্তী কালে হস্তান্তর করে দেন। পর্বত মানব নামবুরিপাদ নিরামিষাশী খাদ্যাভ্যাস মেনে চলেন এবং রোজ একটি নিয়মিত রুটিনের মধ্যে দিয়ে নিজেকে ব্যস্ত এবং সচল রাখেন।