সারনাথের বৌদ্ধস্তূপ, ঐতিহাসিক ঐতিহ্যের কথা...

Tripoto
Photo of সারনাথের বৌদ্ধস্তূপ, ঐতিহাসিক ঐতিহ্যের কথা... 1/15 by Deya Das

ভারতবর্ষে উত্তরপ্রদেশের গঙ্গা ও বরুন নদীর সঙ্গমস্থলের নিকটস্থ বারাণসী শহর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে উত্তর-পূর্ব দিকে সারনাথ অবস্থিত। সারনাথে অবস্থিত মৃগদাবটি গৌতম বুদ্ধের চার পুণ্যভূমির অন্যতম একটি অংশ।

Photo of সারনাথের বৌদ্ধস্তূপ, ঐতিহাসিক ঐতিহ্যের কথা... 2/15 by Deya Das

লুম্বিনী নগরে শাক্যবংশে শুদ্ধোধনের ঘরে জন্ম হয় সিদ্ধার্থের। জীবনচক্রে জরা, ব্যাধি এবং মৃত্যু থেকে মুক্তি লাভের পথ বা মার্গ খুঁজতে খুঁজতে সিদ্ধার্থ শেষে বুদ্ধগয়ায় গিয়ে উপস্থিত হন। সেই স্থানে তিনি দিব্যজ্ঞান লাভের পর সারনাথের মৃগদাবে পৌঁছান এবং সেখানে ধর্মচক্র প্রবর্তনের মাধ্যমে বৌদ্ধ ধর্মের সূচনা করেন।

মৃগদাব-

Photo of সারনাথের বৌদ্ধস্তূপ, ঐতিহাসিক ঐতিহ্যের কথা... 3/15 by Deya Das

মৃগদাব শব্দটির অর্থ হল হরিণদের জঙ্গল। সারনাথের সুবিশাল ইতিহাসে এই মৃগদাব কথাটি সার্বিকভাবে জড়িয়ে রয়েছে। এই উদ্যানে বসেই গৌতম বুদ্ধ সর্বপ্রথম বৌদ্ধ ধর্মের শিক্ষা দান করেন এবং শিষ্যদের উপদেশ বাণী শোনান। হরিণদের দেবতার নাম ছিল সারঙ্গনাথ। ইতিহাসবিদদের মতে, খুব সম্ভবত এই সারঙ্গনাথ নাম থেকেই উৎপত্তি হয় সারনাথ শব্দটির।

সারনাথের বিখ্যাত কিছু জায়গার নাম

ধামেক স্তূপ-

Photo of সারনাথের বৌদ্ধস্তূপ, ঐতিহাসিক ঐতিহ্যের কথা... 4/15 by Deya Das

প্রায় ২৩০০ সাল পূর্বে সম্রাট অশোক এই জায়গাটি নির্মাণ করেছিলেন। এটি ধর্মচক্র স্তূপ নামেও পরিচিত। এর ঠিক ৮০০ সাল পরে এটি আবার পুনঃনির্মাণ করা হয়। মনে করা হয়, গৌতম বুদ্ধ এই স্থানে এসেই তাঁর প্রথম উপদেশ দেন। স্তূপটির দৈঘ্য ৪৩ মিটার এবং প্রস্থ ৩০ মিটার। গায়ে রয়েছে পাথরের উপর খোদাই করা বিভিন্ন রকমের নকশা।

Photo of সারনাথের বৌদ্ধস্তূপ, ঐতিহাসিক ঐতিহ্যের কথা... 5/15 by Deya Das

তবে এই স্তূপের ভিতরে কী রয়েছে তা আজও সকলের অজানা। কেউ কেউ মনে করেন এর মধ্যে হয়ত গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ রয়েছে। তবে এই ধারণার কোনো সাক্ষ্য প্রমাণ মেলেনি। জানা যায়, এই স্থান থেকে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে বৌদ্ধধর্ম আস্তে আস্তে বিস্তার লাভ করতে শুরু করে।

অশোক স্তম্ভ -

Photo of সারনাথের বৌদ্ধস্তূপ, ঐতিহাসিক ঐতিহ্যের কথা... 6/15 by Deya Das

ধামেক স্তূপ চত্বরে রয়েছে অশোকের তৈরি প্রায় ২০ মিটার উচ্চতা সম্পন্ন অশোক স্তম্ভ। এই স্তম্ভের গায়ে ব্রাম্ভি এবং পালি ভাষায় গৌতম বুদ্ধের বাণী খোদিত রয়েছে।

সারনাথ মিউজিয়াম-

Photo of সারনাথের বৌদ্ধস্তূপ, ঐতিহাসিক ঐতিহ্যের কথা... 7/15 by Deya Das

প্রত্নতাত্ত্বিক এই মিউজিয়ামটি প্রধানত অশোকের সিংহ- চিহ্নিত স্থাপত্য বিখ্যাত। এটি মাটি থেকে প্রায় ৪৫ ফুট উঁচুতে অশোক স্তম্ভের শীর্ষে অবস্থান করছে। এই স্থাপত্যটি ভারতের জাতীয় পতাকায় এবং জাতীয় প্রতীক হিসাবে মান্যতা পেয়েছে। এছাড়াও এই মিউজিয়ামের মধ্যে বুদ্ধদেবের অনেক চিত্র রয়েছে।

দিগম্বর জৈন মন্দির-

Photo of সারনাথের বৌদ্ধস্তূপ, ঐতিহাসিক ঐতিহ্যের কথা... 8/15 by Deya Das

১৯ শতকে গড়ে ওঠা একটি প্রাচীন ঐতিহাসিক জায়গা।

বার্মিজ বৌদ্ধমঠ-

Photo of সারনাথের বৌদ্ধস্তূপ, ঐতিহাসিক ঐতিহ্যের কথা... 9/15 by Deya Das

থাই বৌদ্ধমঠ-

Photo of সারনাথের বৌদ্ধস্তূপ, ঐতিহাসিক ঐতিহ্যের কথা... 10/15 by Deya Das

জাপানি বৌদ্ধবিহার-

Photo of সারনাথের বৌদ্ধস্তূপ, ঐতিহাসিক ঐতিহ্যের কথা... 11/15 by Deya Das

ধর্মরাজিক স্তূপ-

Photo of সারনাথের বৌদ্ধস্তূপ, ঐতিহাসিক ঐতিহ্যের কথা... 12/15 by Deya Das

চৌখন্ডি স্তূপ-

Photo of সারনাথের বৌদ্ধস্তূপ, ঐতিহাসিক ঐতিহ্যের কথা... 13/15 by Deya Das

মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গীরের আগমন কালকে স্মরণ করে রাখার জন্য চৌখন্ডি স্তূপের ছয়-কোণা অংশটি তৈরি করা হয়েছিল।

Photo of সারনাথের বৌদ্ধস্তূপ, ঐতিহাসিক ঐতিহ্যের কথা... 14/15 by Deya Das

একসময় এই বৌদ্ধ ধর্মের প্রতি আকর্ষিত হয় সুদূর চীন দেশ থেকে জুয়াং জ্যাং সুদীর্ঘ পথ অতিক্রম করে এই দেশে এসে উপস্থিত হন। পরবর্তী তিনি বৌদ্ধ ধর্মের উপাসক হয়ে ওঠেন। তিনি এই জায়গার একটি বিশদ বিবরণ দিয়েছেন তাঁর লেখা গ্রন্থে, যা পরবর্তীতে এই স্থান খনন করার পর সম্পূর্ণভাবে মিলে যায়। ১৮১৫ সালে কর্নেল সি ম্যাকেঞ্জির তত্ত্বাবধানে ধামেক স্তূপের খনন কার্য শুরু হয়। এরপর ১৮৩৪ সালে আলেকজান্ডার কানিংহাম পুনঃরায় ধামেক স্তূপ ও চৌখন্ডি স্তূপে খননকার্য চালান।

Photo of সারনাথের বৌদ্ধস্তূপ, ঐতিহাসিক ঐতিহ্যের কথা... 15/15 by Deya Das

পরিশেষে বলা যায়, গৌতম বুদ্ধের আবির্ভাবের বহু পূর্বে সারনাথ কিন্তু বেশ সমৃদ্ধ ছিল। কিন্তু পাল বংশের রাজত্ব পর ১০১৭ সালে মহম্মদ গজনির আক্রমণে সারনাথ তার গৌরব হারায়। তবে পরবর্তীতে ১০২৬ সালে মহীপালের দুই ভাই স্থিরপাল বসন্তপাল স্তূপগুলি রক্ষণাবেক্ষণের পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।

নিজের বেড়ানোর অভিজ্ঞতা ট্রিপোটোর সঙ্গে ভাগ করে নিন আর সারা বিশ্ব জুড়ে অসংখ্য পর্যটকদের অনুপ্রাণিত করুন।

বিনামূল্যে বেড়াতে যেতে চান? ক্রেডিট জমা করুন আর ট্রিপোটোর হোটেল স্টে আর ভেকেশন প্যাকেজে সেগুলো ব্যবহার করুন।