একটা সময় ছিল যখন পাড়ার মোড়ে কিংবা শহর কলকাতার ইতি-উতি ছড়িয়ে থাকা কেবিনে চা-এর সঙ্গে যোগ্য জুড়িদার হিসেবে বেছে নেওয়া হত চপ, কাটলেট, সিঙ্গারাকে... নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের সৃষ্ট চরিত্র টেনিদাকেও আমরা দেখেছি নিজের সাঙ্গ-পাঙ্গদের নিয়ে গুল্পকথার ঝড় তুলতেন পাড়ার রকে বসে, আর কখনও সখনও কামড় বসাতেন চিকেন কাটলেট কিংবা সিঙ্গারাতে। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের জীবন এবং জীবিকার যেমন বদল ঘটেছে, তেমনই বদল ঘটেছে আমাদের খাদ্যাভাসেরও। বলা যেতে পারে আমাদের খাবারের স্টাইলেও কিঞ্চিত রদবদল ঘটেছে। পাড়ার মোড়ে চপ, কাটলেট দোকানের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এগিয়ে চলেছে বিভিন্ন ক্যাফেটেরিয়া। আর ক্যাফেটেরিয়া মানেই আজকালকার জেনারেশনদের প্রথম পছন্দই হল কফি আর তার সঙ্গে উপযুক্ত চিজ আর বিভিন্ন টপিংস্ দেওয়া গরম গরম পিৎজা।

পিৎজাতে কামড় বসাতে বসাতে কয়েকটা মজার কথা জেনে নিলে কেমন হয়? আজ ৯ ফেব্রুয়ারি, আজকের দিনটা কিন্তু চকোলেট ডে-র পাশাপাশি ওয়ার্ল্ড পিৎজা ডে নামেও সুপরিচিত। শুনতে বেশ অদ্ভুত লাগলেও এই দিনটার জনপ্রিয়তা কিন্তু দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে পড়েছে ২০০০ সালের পর থেকেই।
পিৎজা নামটা শুনতে জিভে জল আসে না এমন খাদ্যরসিক খুব কমই আছেন, প্রসঙ্গসূত্রে বলে রাখা ভাল দক্ষিণ ইতালির এক শহর থেকে নামটির প্রথম সূত্রপাত হয়, পূর্বসূত্র দশম শতাব্দীর এক লাতিন পুঁথি।
পিৎজার ইতিকথা
খাদ্যরসিকদের নতুন করে বলে দেওয়ার প্রয়োজন নেই যে, পিৎজার জন্মস্থান হল ইতালিতে। তবে এখনকার পিৎজা বানানোর প্রক্রিয়ার সঙ্গে তার যথেষ্ট রকমফের রয়েছে। ইতিহাসের পাতা থেকে জানা যায় ইতালির নেপলসে খেটে খাওয়া এক শ্রেণির মানুষ, সারাদিনের কাজের শেষে উদরপূর্তির রসদ হিসেবে বেছে নিত ব্রেডের উপরে সহজলভ্য তরকারি দিয়ে পরিবেশিত এক ধরনের খাবারের পদকে। সেইসময়েও কিন্তু স্ট্রিট ফুডকে খুব একটা স্বাস্থ্যকর বলে মনে করা হত না। কাজেই সমাজের উচ্চবিত্ত মানুষের কাছে এই পদটি সেইভাবে গৃহীত হয়নি। পরে অবশ্য সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পিৎজার জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে।
পরবর্তীকালে ১৮৮৯ সালে ইতালির রানিকে পরিবেশিত হয় পিৎজা মার্গারেটা। মোজারেলা এবং চিজ সম্বলিত এই পিৎজার স্বাদ জনমানসে খুব সহজেই জায়গা করে নেয়। পিৎজা রোমা, পিৎজা নেপোলিতানা, সিসিলিয়ান পিৎজা এইসবই ইতালির নিজস্ব পদ।
উনিশ শতকে ইতালিয় অভিবাসীশ্রেণির হাত ধরেই আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে পিৎজার জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে। পরবর্তীকালে এর প্রসিদ্ধি সারা বিশ্বেই ছড়িয়ে পড়ে।
কলকাতার কিছু বিশেষ পিৎজার দোকান
ডোমিনোস কিংবা পিৎজা হাটের পাশাপাশি কলকাতার এই কয়েকটি পিৎজার দোকান বা ক্যাফেটেরিয়া অবশ্যই ঘুরে দেখতে পারেন।