সব মানুষেরই মধ্যেই ভ্রমণের প্রতি অকৃত্রিম আগ্রহ থাকে । বছরের যে কোনও সময়ই হোক না কেন ভ্রমণের ফলে মানুষ একটা মানসিক প্রশান্তি অনুভব করেন । আপনিও কি ভ্রমণবিলাসী মানুষ? যদি আপনি বেড়াতে ভালোবাসেন তাহলে এই বর্ষায় উইকএন্ডের ছুটি নিয়ে বেরিয়েই পড়ুন হিমালয়ের উদ্দেশ্যে ।
কলকাতার কাছাকাছি হিমালয়ের পাদদেশ অঞ্চলের বিখ্যাত ভ্রমণ ডেস্টিনেশনগুলি হল -
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৭০০০ ফিট উচ্চতায় অবস্থিত সিকিমের একটি ছোট্ট শহর রাভাংলা । হিমালয়ের পাদদেশ অঞ্চলে অবস্থিত এই শহরে মেয়েনাম এবং টেন্ডয়ং পাহাড়ের একটা অসাধারণ দৃশ্যর সাক্ষী থাকতে পারেন । বর্ষায় এখানে প্রচুর বৃষ্টিপাত হলেও, আবহওয়া বেশ মনোরম থাকে। তাই একটা রোমান্টিক গেট অ্যাওয়ের জন্য রাভাংলাকে অনায়াসেই বেছে নিতে পারেন ।
দর্শনীয় স্থান - রাভাংলার দর্শনীয় স্থানগুলি হল - রালাং মনেস্ট্রি, বন মনেস্ট্রি, বুদ্ধ পার্ক, টেমি চা বাগান, বরং ইত্যাদি ।
পাহাড় এবং দিগন্ত বিস্তৃত চা বাগানের হারিয়ে যেতে চাইলে পৌঁছে যেতে পারেন কার্শিয়ং। সারা সপ্তাহের একঘেয়ে কাজের পর উইকএন্ডের ছুটিতে কার্শিয়ং ভ্রমণ স্বস্তি এনে দিতে পারে । বর্ষায় এখানকার তাপমাত্রা অনেকটাই কম থাকে। তাই দিন দুয়েকের ছুটি নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার প্ল্যানটা মন্দ হবে না ।
দর্শনীয় স্থান - কার্শিয়ং এর দর্শনীয় স্থানগুলি হল - ঈগল ক্রেগ, ডাউ হিল, ডাউ হিল পার্ক, ডাউ হিল ফরেস্ট মিউজিয়াম ইত্যাদি ।
হিমালয়ের মোহনীয় রূপ দর্শন করার জন্য রিনচেপং আদৰ্শ স্থান । দার্জিলিং- এ পর্যটকদের ভিড়ে অনেক সময়ই কাঞ্চনজঙ্ঘা সাথে একান্তে আলাপচারিতা সম্ভবপর হয়ে ওঠে না । তাই হিমালয় তথা কাঞ্চনজঙ্ঘার সঙ্গে দু-দণ্ড একান্তে সাক্ষাৎ করার জন্য সিকিমের রিনচেপংকে অভিজ্ঞ পর্যটকরা বেছে নেন ।
দর্শনীয় স্থান - এখানকার দর্শনীয় স্থানগুলি হল - নিগদো, রিনচেপং মনেস্ট্রি, ইত্যাদি ।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দর্শনের জন্য রিষপ স্থানটি আদর্শ ।অগণিত সবুজ পাহাড়ে ঘেরা এই স্থানটি থেকে দূরে কাঞ্চনজঙ্ঘার হালকা আভাসকে অনুভব করা যায় ।পশ্চিমবঙ্গের কালিম্পং জেলার অন্তর্ভূক্ত এই স্থানটি নানান পরিযায়ী পাখিদের মুখ্য বাসস্থান হিসেবেও পরিচিত ।
দর্শনীয় স্থান - ঋষপ থেকে লাভা, লোলেগাঁও, কালিম্পং দর্শন করে নিতে পারেন ।
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৬৯৫৬ ফিট উচ্চতায় অবস্থিত ছোট্ট একটি গ্রামের অপর নাম হল - লেপচাজগৎ। প্রিয়মানুষের সাথে একান্তে প্রকৃতির কোলে ছুটি কাটানোর জন্য পৌঁছে যেতে পারেন লেপচাজগৎ।
দর্শনীয় স্থান - এখানকার বিখ্যাত ভ্রমণস্থানগুলি হল - ঝোরপোখরি, পশুপতি মার্কেট এবং ঘুম মনেস্ট্রি ।
শিলিগুড়ি শহর থেকে মাত্র কয়েক কিমি অদূরে অবস্থিত চালসা শহর । ডুয়ার্স অঞ্চলে অবস্থিত এই স্থানটি পাহাড়, নদী, জঙ্গল, চা বাগান সব মিলিয়ে একটা কমপ্লিট প্যাকেজ ।
দর্শনীয় স্থান - চালসা থেকে আপনি গরুমারা ন্যাশনাল পার্ক, চাপড়ামারি ওয়াইল্ডলাইফ সাংচুয়ারি দর্শন করে নিতে পারেন ।
৭. মংপং
পূর্ব হিমালয়ের প্রকৃতির রূপসজ্জা দর্শনের জন্য মংপং স্থানটি আদর্শ । কালিম্পং জেলার এই ছোট্ট পাহাড়ি গ্রামের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সাথে সাথে গ্রামের মানুষদের আতিথেয়তা ও আপনাকে মুগ্ধ করবে ।
দর্শনীয় স্থান - মংপং ভ্রমণে গিয়ে করোনেশন ব্রিজ, মহানন্দা সাংচুয়ারী দর্শন করে নিতে পারেন ।
কীভাবে যাবেন?
বিমানে - কলকাতা বিমানবন্দর থেকে পৌঁছে যান শিলিগুড়ির বাগডোগরা বিমানবন্দর । সেখান থেকে গাড়ি ভাড়া করে পৌঁছে যান গন্তব্যে ।
ট্রেনে - কলকাতা থেকে উত্তরবঙ্গগামী যে কোনও ট্রেন ধরে পৌঁছে যান নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন । স্টেশন থেকে গাড়ি ভাড়া করে আপনার পছন্দের ডেস্টিনেশনে পৌঁছে যেতে পারেন ।
বর্ষাকালীন সময়ে পাহাড়ে ভ্রমণের পূর্বে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন …
১. বর্ষায় পাহাড়ে ভ্রমণের আগে রেইনকোট বা ছাতা সঙ্গে নিয়ে নিন ।
২. ব্যাগে অতিরিক্ত জামা কাপড় সঙ্গে নিন ।
৩. বর্ষাকালে পাহাড়ে ধস নামার সম্ভাবনা থাকে তাই হাতে সময় নিয়ে ভ্রমণের পরিকল্পনা করুন ।
৪. বর্ষায় অনেক মশা এবং পোকা মাকড়ের উপদ্রবের সম্ভাবনা থাকে তাই সাথে মশা মারার স্প্রে সাথে রাখুন ।
৫. ভ্রমণকালীন সময়ে যত্রতত্র জল খাবেন না, বিশুদ্ধ জল কিনে খাওয়াই ভালো ।
৬. করোনাকালীন ভ্রমণের ক্ষেত্রে মাস্ক এবং স্যানিটাইজার এবং প্রয়োজনীয় দূরত্ববিধি মেনে চলুন।
উইকএন্ডের ছুটি কাটানোর জন্য আর অন্য কোনো বিকল্প কি হতে পারে?