গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতে করোনা ভাইরাসের আক্রমণের সংখ্যাটা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪ লক্ষের দোরগোড়ায় । তাই এই মুহূর্তের খবর অনুযায়ী উত্তরাখণ্ড সরকার কর্তৃপক্ষ এই বছরের মতো চারধাম যাত্রা বাতিল করেছেন। আমরা সকলেই জানি কিছুদিন আগে কুম্ভমেলা আয়োজনের ফলে উত্তরাখণ্ড তথা ভারতবর্ষে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা যথেষ্ট পরিমাণে বেড়েছে । সম্ভবত সেই কারণেই উত্তরাখণ্ড সরকার এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন ।
উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী তীরথ সিং রাওয়াত একটি সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী জানিয়েছেন চারটি মন্দির অর্থাৎ গঙ্গোত্রী, যমুনোত্রী, কেদারনাথ এবং বদ্রীনাথের একমাত্র প্রধান পুরোহিতরাই সব রকম রীতিনীতি মেনেই এই বছরের পুজো সম্পন্ন করবেন । এক্ষেত্রে তীর্থযাত্রীদের প্রবেশ একেবারেই নিষিদ্ধ । প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি, উত্তরাখণ্ড সরকার কর্তৃপক্ষ এই বছর ১৪ই মে চারধাম যাত্রা আয়োজনের পক্ষে সবুজ সংকেত জারি করেছিলেন ।
সরকার কর্তৃপক্ষ তরফে জানানো হয়েছিল বদ্রীনাথ ধাম ১৮ই মে, কেদারনাথ মন্দির মন্দির ১৭ই মে, গঙ্গোত্রী এবং যমুনোত্রী মন্দির ১৫ই মে দর্শণার্থীদের জন্য খোলা হবে । আর সেই অনুযায়ী উত্তরাখণ্ড সরকার কর্তৃপক্ষ কোভিড গাইডলাইন মেনেই চারধাম যাত্রা আয়োজনের প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছিলেন । যেমন সমস্ত তীর্থযাত্রীদের RT-PCR এর নেগেটিভ টেস্ট রিপোর্ট এবং অন্যান্য প্রোটোকলগুলির দিকে নজর দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন ।
উত্তরাখণ্ড ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট বোর্ড (UTDB) কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন গত বুধবার পর্যটনমন্ত্রী এবং মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনের মাধ্যমে একটি আলোচনা সভার সাহায্যে এই বছর চারধাম যাত্রা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ।
দেবস্থানাম বোর্ড এর সিইও রবিনাথ রামান জানিয়ে বর্তমান সময়ের কথা ভেবে যতদিন না পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে ততদিনের জন্য চারধাম যাত্রা স্থগিত রাখা হয়েছে ।
গতবছর ও কিছু সময়ের জন্য এই যাত্রা স্থগিত রাখা হয়েছিল । তবে স্থানীয় মানুষরা এই যাত্রার অনুমতি পেয়েছিলেন ।২০২০তে এই যাত্রার শুভারম্ভ হয়েছিল জুলাই মাসে । তবে নির্দিষ্ট সংখ্যক তীর্থযাত্রী নিয়েই এই যাত্রার আয়োজন করা হয়েছিল ।গতবছর কেদারনাথ এর তীর্থযাত্রীর সংখ্যা ছিল ৮০০, বদ্রীনাথের তীর্থযাত্রীর সংখ্যা ছিল ১২০০, গঙ্গোত্রীর যাত্রী সংখ্যা ছিল ৬০০, এবং যমুনেত্রীর তীর্থযাত্রীর সংখ্যা ছিল ৪০০ জন ।
স্বাস্থ্য দপ্তরের বুলেটিন অনুযায়ী গত ২৪ঘণ্টায় উত্তরাখণ্ডে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬০৫৪ এবং ১০৮ জনের মৃত্যু হয়েছে ।দেরাদুন জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২৩২৯ জন, এর পরবর্তী স্থানে রয়েছে হরিদ্বার । ২৪ ঘন্টায় হরিদ্বারে আক্রান্ত হয়েছেন ১১৭৮ জন, উধমপুরে আক্রান্ত হয়েছেন ৮৪৯ জন, নৈনিতালে আক্রান্তের সংখ্যা ৬৬৫ জন , চমলীতে আক্রান্ত হয়েছেন ১৭৫ জন, পাউরিতে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১৭৪জন মানুষ । তবে এখানেই কোভিড -১৯ ভাইরাসের আক্রমণ স্তব্ধ হয়নি । চম্পাওয়াত জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১৫৩, আলমোড়াতে আক্রান্ত হয়েছেন ১৪০জন এবং তেহরিতে সংক্রমণের সংখ্যা ১০৯ জন ।
এই পরিস্থিতে উত্তরাখণ্ড সরকারের এই সিদ্ধান্তটি এক্কেবারে সঠিক । এই রোগটাকে একেবারেই অগ্রাহ্য করবেন না । যথাযথ ভাবে মাস্ক পড়ুন, দূরত্ব বজায় রাখুন, বার বার হাত ধুয়ে নিন , আর হ্যাঁ টিকা গ্রহণ করুন। চলুন না সবাই মিলে করোনা মুক্ত পরিবেশ গড়ে তুলি ।