মেঘালয় বেড়াতে যাওয়ার আগে এই গায়ে কাঁটা দেওয়া গল্পগুলো শুনে নিন 

Tripoto
Photo of মেঘালয় বেড়াতে যাওয়ার আগে এই গায়ে কাঁটা দেওয়া গল্পগুলো শুনে নিন  1/7 by Doyel Banerjee
ছবি সংগৃহীত

মেঘালয়ে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অভাব নেই। এখানে থাকেন সহজ সরল খাসি ও জয়ন্তিয়া উপজাতিরা। মেঘালয় মানেই অপার সৌন্দর্য আর অ্যাডভেঞ্চার। প্রতিদিন একেক রকমের চমক নিয়ে অপেক্ষা করে এই জায়গা। মেঘালয়ে বেড়াতে গেলে মনে হয় যে বয়স যেন অনেকটাই কমে গিয়েছে।

মেঘালয়ের রাজধানী শিলং একটি আকর্ষণীয় শহর এবং এর সৌন্দর্য আপনাকে অবাক করে দেবে। এই শহরের আনাচে কানাচে লুকিয়ে আছে অসংখ্য রোমহর্ষক গল্প।

নোহকালিকাই জলপ্রপাত

নোহকালিকাই চেরাপুঞ্জির এবং ভারতের উচ্চতম জলপ্রপাত। ১,১১৫ ফিট উচ্চতা থেকে এখানে জল ঝাঁপিয়ে পড়ে মাটিতে। এই জলধারা বৃষ্টির জলে পুষ্ট এবং এর নিচে যে কুণ্ড তৈরি হয়েছে তার রঙ ঘন সবুজ।

অপূর্ব সুন্দর হলেও এই জলপ্রপাতের সঙ্গে জড়িয়ে আছে এক করুণ গাথা। খাসি ভাষায় নোহকালিকাই শব্দের মানে হল কা ও লিকাইয়ের ঝাঁপিয়ে পড়া। জেনে নেওয়া যাক কেন এমন নামকরণ হল।

বলা হয় এই জলপ্রপাতের কাছে রাঙ্গিরথে বলে একটি গ্রামে লিকাই বলে এক অল্প বয়সী বিধবা থাকতেন। তাঁর একটি ছোট্ট মেয়ে ছিল। গ্রামের সবার পরামর্শে আবার বিয়ে করে লিকাই। কিন্তু লিকাইয়ের হিংসুটে স্বামী তাঁর শিশুকন্যাকে হত্যা করে লিকাইকে সেই মাংস রান্না করে খাওয়ায়। রাগে দুখে উঁচু জলপ্রপাত থেকে ঝাঁপিয়ে পড়ে লিকাই। সেই থেকেই এই নাম।

Photo of মেঘালয় বেড়াতে যাওয়ার আগে এই গায়ে কাঁটা দেওয়া গল্পগুলো শুনে নিন  2/7 by Doyel Banerjee
নোহকালিকাই জলপ্রপাত

সুইট জলপ্রপাত

এটি শিলং এ অবস্থিত। হ্যাপি ভ্যালি থেকে এর দূরত্ব মাত্র ৫ কিলোমিটার। এই ফলসকে একই সঙ্গে সুন্দর ও ভয়ঙ্কর আখ্যা দেওয়া হয়েছে। পর্যটকদের এই ফলসের বেশি কাছে যাওয়ার অনুমতি নেই। কারণ এই জলপ্রপাত পর্যন্ত যাওয়ার রাস্তা খুব খারাপ এবং স্থানীয়রা মনে করে এই ফলস প্রেতাত্মা দ্বারা চালিত হয়! এই ফলসের আশেপাশে দারচিনি,ফার্ন এইসব গাছ আছে। স্থানীয়রা বলেন এখানে যদি কেউ বিজোড় সংখ্যায় আসেন তাহলে জোড় সংখ্যায় ফিরবেন!

এখানে বহু মানুষ আত্মহত্যা করেছেন তাই জায়গাটা আর কিছু না হোক, খানিকটা গা ছমছমে তো বটেই।

Photo of মেঘালয় বেড়াতে যাওয়ার আগে এই গায়ে কাঁটা দেওয়া গল্পগুলো শুনে নিন  3/7 by Doyel Banerjee
Photo of মেঘালয় বেড়াতে যাওয়ার আগে এই গায়ে কাঁটা দেওয়া গল্পগুলো শুনে নিন  4/7 by Doyel Banerjee

ডকি

ডকি একদম ছবির মতো সুন্দর। দেখে মনে হয় কেউ যেন এঁকে রেখেছে। এখানকার উমনগট নদীর জল কাচের মতো স্বচ্ছ। এই নদীতে নৌকো বিহার করলে এক ঝলক মিলবে প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশেরও।

ডকিকে নিয়ে যে কাহিনি চালু আছে সেটা হল-

অনেকদিন আগে দুই বোন স্থির করল যে তাঁরা সুরমা উপত্যকায় (বর্তমানে যার মূল অংশ বাংলাদেশে) দৌড় প্রতিযোগিতা করবে।

তাঁরা রেস শুরু করল। দীর্ঘপথ থাকা স্বত্ত্বেও উমনগট নরম ঘাসে ভরা ভূখণ্ডের মধ্য দিয়ে সহজ রুটটি বেছে নিল। অন্যদিকে, উমিউ নিজেকে অন্য বোনের চেয়ে শক্তিশালী বলে বিবেচনা করে পাহাড় ভাঙ্গার সিদ্ধান্ত নিল। এরপরেই, উমনগট গন্তব্যে পৌঁছে গেল, কিন্তু উমিউয়ের আর খোঁজ পাওয়া যায়নি। বহুদিন কেটে গেল উমিউ আর এল না।

যদিও কাহিনি বলে যে উমিউ উপত্যকায় পৌঁছে দেখে যে উমনগট আগেই পৌঁছে গিয়েছে। উমিউ ছিল বড় বন,সে ছোট বোনের কাছে পরাজয় মেনে নিতে পারল না। উমিউ ঠিক করল যে সে আর বাড়ি ফিরবে না এবং উমনগট ঠিক করল সে এই উপত্যকাতেই থাকবে। এই হল বাংলাদেশের নদীর কাহিনি। উমনগট যে পথ দিয়ে দৌড়েছিল সেই রাস্তা ডকি দিয়ে যায়।

Photo of মেঘালয় বেড়াতে যাওয়ার আগে এই গায়ে কাঁটা দেওয়া গল্পগুলো শুনে নিন  5/7 by Doyel Banerjee
Photo of মেঘালয় বেড়াতে যাওয়ার আগে এই গায়ে কাঁটা দেওয়া গল্পগুলো শুনে নিন  6/7 by Doyel Banerjee
Photo of মেঘালয় বেড়াতে যাওয়ার আগে এই গায়ে কাঁটা দেওয়া গল্পগুলো শুনে নিন  7/7 by Doyel Banerjee

বালপাকরাম জাতীয় উদ্যান

মেঘালয়ের গারো পাহাড়ের দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত বালপাকরাম জাতীয় উদ্যানটি ভারতের অন্যতম জাতীয় উদ্যান এবং এটি বাংলাদেশের সাথে আন্তর্জাতিক সীমান্তের নিকটবর্তী অঞ্চলে অবস্থিত।

বালপাকরাম জাতীয় উদ্যানের পিছনের গল্প:

এটি বিশ্বাস করা হয় যে মেঘালয়ের এই জাতীয় উদ্যানটি মৃত আত্মার অতিপ্রাকৃত উপস্থিতিতে ভরপুর!

তবে এটি সাহসী ভ্রমণকারীরা তাঁদের তালিকায় এই জায়গাটি রাখতে পারেন। অন্ধকারে ডুবে যাওয়া ঘন অরণ্য বা গুহাগুলির মধ্যে আছে অপার রহস্য যা উত্সাহীদের আকর্ষণ করবেই।

এই জাতীয় উদ্যানটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩,০০০ ফুট উচ্চতায় প্রায় ২০০ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে অবস্থিত। সন্দেহ নেই যে এটি দেশের অন্যতম সেরা বায়ো হটস্পট হিসাবে বিবেচিত। এ পার্কটিতে এশিয়ান গোল্ডেন বিড়াল, কলস উদ্ভিদ, ভারতীয় হাতি, বেঙ্গল টাইগার এবং আরও অনেকগুলি বিরল ও বিপন্ন প্রজাতির বাসিন্দার আশ্রয়স্থল। গারো উপজাতিরা এর নাম দিয়েছে 'আত্মার দেশ' এবং এই স্থানটিকে তাঁরা অত্যন্ত পবিত্র বলে মনে করে। এই অরণ্যের অভ্যন্তরে যে রহস্যজনক ঘটনা ঘটেছিল তা বৈজ্ঞানিকভাবেও প্রমাণিত হতে পারে নি। সবার মধ্যে সবচেয়ে রহস্যজনক হ'ল শিমা ওয়ালিচি গাছ। স্থানীয়দের অভিমত, মৃতদের অন্য জগতের দিকে যাত্রা করার সময় গাছের কাণ্ডে অস্বাভাবিক কিছু গর্ত ছিল যা অস্থির আত্মাদের দ্বারা করা হয়েছিল ।

পর্যটকদের জন্য কিছুটা সাবধানতা অবলম্বন করার পরামর্শ দেওয়া হয় যাতে তারা অন্য জগতে পাড়ি দেওয়ার সময় মৃত আত্মাকে জাগ্রত না করে।

নিজের বেড়ানোর অভিজ্ঞতা ট্রিপোটোর সঙ্গে ভাগ করে নিন আর সারা বিশ্ব জুড়ে অসংখ্য পর্যটকদের অনুপ্রাণিত করুন।

বিনামূল্যে বেড়াতে যেতে চান? ক্রেডিট জমা করুন আর ট্রিপোটোর হোটেল স্টে আর ভেকেশন প্যাকেজে সেগুলো ব্যবহার করুন।

(এটি একটি অনুবাদ করা আর্টিকেল। মূল প্রবন্ধ পড়তে চাইলে এখানে ক্লিক করুন)