সাধ্যের মধ্যেই ঘুরে আসুন 'ফুলের উপত্যকা' থেকে। কাশ্মীর নয় এ হল 'ক্ষীরাই'...

Tripoto

এমন ফুলের শোভা দেখতে আসতেই হবে (ছবি সংগৃহীত)

Photo of Khirai Flower Garden, Meghadangar, West Bengal, India by Never ending footsteps

বাঙালির রং-বেরঙের ফুল গাছের প্রতি রয়েছে একটা আলাদা আগ্রহ। শৌখিন মধ্যবিত্ত বাঙালিও নিজের শখ পূরণ করতে মোটামুটি সাধ্যের মধ্যে, দু-কামরার ফ্ল্যাটের লাগোয়া বারান্দাতে, কখনও আবার খোলা ছাদ জুড়ে টবের পরে টব সাজিয়ে ফুল গাছের বাগান তৈরি করে ফেলে, ফুলের প্রতি রয়েছে বাঙালির অদ্ভুত এক মায়াভরা যত্ন, খেয়াল করলে দেখবেন, শৌখিন বাঙালিরা নিজের সন্তান স্নেহেই ফুলগাছগুলোকে যত্ন করে থাকেন।

আর হরেক রকমের ফুল গাছের শোভা দেখতে ছুটে যায় কখনও কাশ্মীরে, কখনও আবার সিকিমে। কাশ্মীরে তো প্রতিবছরই শীতকালে হরেক রকমের টিউলিপ ফুলের শোভা বিশেষভাবে আমাদের চোখে পড়ে, আর পাহাড়ি উপত্যকা জুড়ে বাহারি ফুলের শোভা দেখতে পর্যটকদের ভিড় তো রয়েছেই।

এ ভারি সুন্দর দেশ (ছবি সংগৃহীত)

Photo of সাধ্যের মধ্যেই ঘুরে আসুন 'ফুলের উপত্যকা' থেকে। কাশ্মীর নয় এ হল 'ক্ষীরাই'... by Never ending footsteps

তবে করোনা পরিস্থিতিতে সেই সুদূর কাশ্মীরের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়া নিতান্তই চিন্তার বিষয়, তবে হাতের কাছে অন্য উপায় যখন রয়েছে, তখন বাঙালির ফুল গাছের শোভা দেখার সৌভাগ্যকে কে আটকায়?

বিশ্বাস হওয়ারও কথা নয়, এ তো কোনও ম্যাজিক নয় যে, চাইলেই সিকিম কিংবা কাশ্মীরে টুক করে ঘুরে আসা যাবে! নাহ... তা যাবে না বৈকি, তবে ফুলের উপত্যকার সৌন্দর্য আপনি চাইলে নিজেই উপভোগ করতে পারবেন, আর তাও নিজের সাধ্যের মধ্যেই, ওই ধরুন কোনও উইকেন্ড ট্রিপের মধ্যে দিয়ে।

বিঘার পরে বিঘা রং-বেরঙের বাহারি ফুলের শোভা দেখতে অবশ্যই আসতে পারেন বাংলার ফুলের উপত্যকা 'ক্ষীরাই' থেকে।

ক্ষীরাই আসলে একটি নদীর নাম এবং নদীর নাম থেকেই বাংলার পূর্ব মেদিনীপুরের এই জায়গাটির নাম হয়েছে ক্ষীরাই, আপনি বিঘার পরে বিঘা জুড়ে দেখতে পাবেন, হরেক রকমের ফুলের মেলা... বস্তুত ফুলের শোভা আপনাকে বিশেষভাবে মুগ্ধ করবেই। প্রাচীন গ্রামবাংলার রূপকে আত্মস্থ করতে চাইলে আপনি অবশ্যই যেতে পারেন এই জায়গাটিতে। প্রসঙ্গক্রমে বলা যায়, পূর্ব মেদিনীপুরের অন্তর্গত এই স্থানটিতে প্রবহমান ক্ষীরাই নদীতে হাঁটুজল থাকলেও, বর্ষাকালে অতিরিক্ত বৃষ্টির ফলে কিন্তু বাণভাসি পরিবেশের সৃষ্টি হয়, এই অঞ্চলে।

কী কী করতে পারেন

ক্ষীরাইতে গিয়ে আপনি অবশ্যই পাবেন, গ্রামীণ সংস্কৃতির নিপুণ এবং আটপৌঢ়ে রূপটি, গ্রামবাংলার মানুষের সহজ-সরল অমায়িক রূপটি নিজের চোখে দেখতে চাইলে অবশ্যই ঘুরে আসতে পারেন ক্ষীরাই থেকে। আর আপনাদের মধ্যে যাঁরা ফুলপ্রেমী তাঁদের তো সোনায় সোহাগা পরিবেশ, স্বল্পমূল্যে চাষিভাইদের কাছ থেকে সেরা ফুল কিনে নিতে পারবেন। শহুরে ব্যস্ততা আর রোজকার একঘেয়েমি থেকে মুক্তি পেতে গ্রামীণ সংস্কৃতির স্বাদ আপনাকে মুগ্ধ করতে বাধ্য। সারাদিন ধরে বিঘার পরে বিঘা ফুল গাছ দেখার পাশাপাশি কাঁসাই ব্রিজের উপর দিয়ে ট্রেনের অনবরত যাতায়াত আপনার মন ভাল করে দেবে। শহুরে হাইরাইজ ব্লিডিং আর সাজানো শপিং মলের শোভা থেকে মুক্তির আস্বাদ পেতে ঘুরে আসুন ক্ষীরাই থেকে। ফুলের শোভা দেখার পাশাপাশি আপনাকে মুগ্ধ করতে রয়েছে লালমাটির ছোঁয়া।

নিজের চোখেই আপনি ফুলচাষ দেখতে পারবেন (ছবি সংগৃহীত)

Photo of সাধ্যের মধ্যেই ঘুরে আসুন 'ফুলের উপত্যকা' থেকে। কাশ্মীর নয় এ হল 'ক্ষীরাই'... by Never ending footsteps

কীভাবে যাবেন

হাওড়া-খড়গপুর লাইনের একটি গুরুত্বপূর্ণ রেলস্টেশন হল ক্ষীরাই। এই রেলপথ সংলগ্ন ট্রেন ধরেই আপনি পৌঁছে যাবেন ক্ষীরাইতে। এর কাছাকাছি রেলস্টেশনগুলো হল হাউর এবং পাশকুঁড়া জংশন এবং গুরুত্বপূর্ণ রেলস্টেশন বলতে রয়েছে হাওড়া এবং খড়গপুর।

রং-বেরঙের ফুলের শোভা (ছবি সংগৃহীত)

Photo of সাধ্যের মধ্যেই ঘুরে আসুন 'ফুলের উপত্যকা' থেকে। কাশ্মীর নয় এ হল 'ক্ষীরাই'... by Never ending footsteps

আপনাদের মধ্যে যাঁরা গাড়িতে ক্ষীরাই যাওয়ার কথা ভাবনাচিন্তা করছেন, তাঁরা অবশ্যই যেতে পারেন, হাওড়া থেকে ক্ষীরাই ৭৫ কিমি দূরত্বে অবস্থিত।

নিজের বেড়ানোর অভিজ্ঞতা ট্রিপোটোর সঙ্গে ভাগ করে নিন আর সারা বিশ্ব জুড়ে অসংখ্য পর্যটকদের অনুপ্রাণিত করুন।

বিনামূল্যে বেড়াতে যেতে চান? ক্রেডিট জমা করুন আর ট্রিপোটোর হোটেল স্টে আর ভেকেশন প্যাকেজে সেগুলো ব্যাবহার করুন