ইসলাম ধর্মাবলম্বী একটি দেশের তরফে হিন্দু মন্দির এবং ধর্ম-সংস্কৃতিকে আগলে রাখার প্রচেষ্টা প্রশংসনীয়

Tripoto
Photo of ইসলাম ধর্মাবলম্বী একটি দেশের তরফে হিন্দু মন্দির এবং ধর্ম-সংস্কৃতিকে আগলে রাখার প্রচেষ্টা প্রশংসনীয় 1/1 by Deya Das
পাকিস্তানের বালুচিস্তান প্রদেশের লাস বেলা নামক স্থানে এই আগ্নেয়গিরি দর্শনের জন্য পাকিস্থানের হিন্দু দর্শনার্থীদের প্রবেশ করতে দেখা যায় |

কেন হিন্দু দর্শনার্থীরা এই আগ্নেয়গিরি দর্শন করতে যান?

প্রায় ৩০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত কাদামাটি দিয়ে প্রাকৃতিকভাবে নির্মিত এই চন্দ্রগুপ আগ্নেয়গিরিটি | বাইরে থেকে এর আকৃতি অনেকটা গম্বুজের মতো, যার মুখগহ্বর লাভা দ্বারা পরিপূর্ণ | সকল হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষের কাছে এই আগ্নেয়গিরিটির একটি বিশেষ আধ্যাত্বিক গুরুত্ব রয়েছে | বালুচিস্তান প্রদেশের এই বিখ্যাত আগ্নেয়গিরি দর্শনের উদ্দেশ্যে প্রতিবছর এপ্রিল মাসে একটি বিশেষ তীর্থযাত্রার আয়োজন করা হয় | এই তীর্থযাত্রায় অংশগ্রহণ করেন পাকিস্তান ও ভারতের বহু সাধু-সন্তগণ এবং হিন্দু-দর্শনার্থীরা | এই পবিত্র আগ্নেয়গিরিকে কেন্দ্র করে আয়োজিত এই তীর্থযাত্রার সূচনা হয় পাকিস্তানের করাচি শহর থেকে এবং এই তীর্থযাত্রায় বালুচিস্তান প্রদেশের প্রসিদ্ধ মরুতীর্থ হিংলাজ দেবী মন্দির পর্যন্ত প্রায় ৩৩০ কিমি দূরত্ব অতিক্রম করা হয়ে থাকে |

দর্শনার্থীদের প্রবল সমাবেশ (ছবি সংগৃহীত)

Photo of Chandragup Volcanos, Makran Coastal Hwy, Pakistan by Deya Das

হিন্দু তীর্থযাত্রীদের বিশ্বাস যে এই আগ্নেয়গিরির কাছে মানত করলে স্মরণার্থীদের সকল ইচ্ছা পূর্ণ হবে | সেই কারণে দর্শনার্থীরা আগ্নেয়গিরির মুখগহ্বরে সমস্ত রকম পূজার সামগ্রী যেমন নারকেল, ফুল ইত্যাদি সহযোগে পূজা সম্পন্ন করে ভগবানকে তুষ্ট করার চেষ্টা করেন | কোনও কোনও ভক্তবৃন্দ আবার আগ্নেয়গিরির লাভা থেকে নির্গত পবিত্র ভস্ম নিয়ে যান এবং এই ভস্ম দিয়ে বিভিন্ন মূর্তি নির্মাণ করে থাকেন | লৌকিকভাবে প্রচলিত আছে যে, লাভার ভস্ম দিয়ে নির্মিত মূর্তিগুলো বাড়িতে স্থাপন করলে শুভ শক্তির বিকাশ হবে |

বলাই বাহুল্য, এই আগ্নেয়গিরিতে পৌঁছনোর রাস্তাটি কিন্তু বেশ কঠিন | সমস্ত পথ জুড়ে রয়েছে রুক্ষ্ম ও শুষ্ক বালির পাহাড় | তীব্র গরমে এই আগ্নেয়গিরি অতিক্রম করার কাজটা মোটেই সহজসাধ্য নয় | এই তীর্থযাত্রাটি শুরু হয় থর মরুভূমির পশ্চিম প্রান্ত থেকে, তারপর আরব সাগর পেরিয়ে যাত্রাটি শেষ হয় বালুচিস্তানে|

তীর্থযাত্রার শেষে দর্শন করে নিতে পারেন হিংলাজ দেবীর মন্দির | বালুচিস্তান প্রদেশের ল্যারি তেহসিল অঞ্চলের একটি গিরিখাতের মধ্যে অবস্থিত এই প্রসিদ্ধ মন্দিরটি | হিন্দু ভক্তদের কাছে এই হিংলাজ মন্দিরটি অন্যান্য শক্তিপীঠের তুলনায় একটু বেশিই গুরুত্বপূর্ণ | হিন্দু শাস্ত্র অনুসারে, সতীর দেহত্যাগের পর তাঁর মস্তকটি এই অঞ্চলে পতিত হয় যা বর্তমানে পাকিস্তানে অবস্থিত |

দেবী সতীর অন্যান্য কাহিনী ও শক্তি পিঠ সম্পর্কে বিশদে জানতে এখানে পড়ুন |

ভক্তবৃন্দ সমাবেশে আবেগঘন যজ্ঞানুষ্ঠান (ছবি সংগৃহীত)

Photo of ইসলাম ধর্মাবলম্বী একটি দেশের তরফে হিন্দু মন্দির এবং ধর্ম-সংস্কৃতিকে আগলে রাখার প্রচেষ্টা প্রশংসনীয় by Deya Das

দেশভাগের পরে সাম্প্রদায়িক বিভাজন হলেও, ধর্মের ক্ষেত্রে মানুষের মন যে একই সূত্রের বন্ধনে আবদ্ধ রয়েছে সেটি এই অঞ্চলে তীব্র ভাবে লক্ষ করা যায় | হিন্দু দর্শনার্থীদের সঙ্গে সঙ্গে ইসলাম ধর্মাবলম্বী মানুষেরও আগমন আপনার চোখে পড়বে |মুসলিম তীর্থযাত্রীদের কাছে হিংলাজ মন্দিরটি ‘নানি-কি-হজ্’ নামে পরিচিত |

রাজনৈতিক ভাবে ভারত ও পাকিস্তান দুটি আলাদা দেশ হলেও ধর্ম ও লোককথা মধ্য দিয়ে এখনও দুটি দেশ ধরিত্রী মাতার কোলে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ | একটি মুসলিম দেশ কত সুন্দর ভাবে একটি হিন্দু মন্দির ও সেখানকার ধর্মীয় সংস্কৃতি কে আগলে রেখেছে তার জন্য বালুচিস্তান তথা পাকিস্তান অবশ্যই ধন্যবাদজ্ঞাপনের অংশীদার |

নিজের বেড়ানোর অভিজ্ঞতা ট্রিপোটোর সঙ্গে ভাগ করে নিন আর সারা বিশ্ব জুড়ে অসংখ্য পর্যটকদের অনুপ্রাণিত করুন।

বিনামূল্যে বেড়াতে যেতে চান? ক্রেডিট জমা করুন আর ট্রিপোটোর হোটেল স্টে আর ভেকেশন প্যাকেজে সেগুলো ব্যাবহার করুন

(এটি একটি অনুবাদকৃত আর্টিকেল। আসল আর্টিকেল পড়তে এখানে ক্লিক করুন!)