আপনি কি বিবলিওফিল ওরফে বইপ্রেমিক? তাহলে এই নয় লাখেরও বেশি বইয়ের সম্ভার রয়েছে আপনার জন্য...

Tripoto

বাঙালি মাত্রেই গল্পপ্রেমী, আড্ডাপ্রেমী, চা-প্রেমী আর সেই সঙ্গে বইপ্রেমী। বাঙালি যেভাবে কলেজস্ট্রিটের বইপাড়ায় বই সন্ধান করতে ভালবাসে, তা কোনও গুপ্তধন সংগ্রহের থেকে কোনও অংশেই কম নয়। বাঙালির অন্যতম পছন্দের গোয়েন্দা চরিত্র ফেলুদার গল্পেও আমরা পেয়েছি এমনই এক বইপ্রেমী মানুষকে, একধারে তিনি বইপ্রেমী, অন্যদিকে তিনি চলমান এনসাইক্লোপিডিয়া... তিনি 'সিধু জ্যাঠা'। তাঁর সঙ্গে আমাদের প্রথম আলাপ 'সোনার কেল্লা' উপন্যাসের। বইপ্রেমী বাঙালি যে তার সাধের বইপত্রকে একটু সন্তান স্নেহেই পরিচর্যা করে থাকে, সে কথা বলাই বাহুল্য। সিধু জ্যাঠার চরিত্র বর্ণনার ক্ষেত্রেও লেখক সেই কথাই তোপসের মুখ থেকে বলিয়ে নিয়েছেন, "সিধু জ্যাঠার খুব বই কেনার বাতিক, আর বইয়ের যত্ন৷ সবাইকে বই ধার দেন না, তবে ফেলুদাকে দেন৷" আসলে সন্তানকে কাছ ছাড়া করতে কিংবা বেশিক্ষণ চোখের আড়ালে রাখতে কে বা পছন্দ করবে।

Photo of আপনি কি বিবলিওফিল ওরফে বইপ্রেমিক? তাহলে এই নয় লাখেরও বেশি বইয়ের সম্ভার রয়েছে আপনার জন্য... 1/1 by Never ending footsteps
রাশি রাশি বইয়ের সম্ভার (ছবি সংগৃহীত)

এ তো না হয় গেল গল্পের চরিত্র আর কলেজস্ট্রিটের নস্টালজিয়ার কথা, এর থেকে ভ্রমণ কিংবা ঘুরতে যাওয়ার সম্পর্ক কোথায়? সেই সম্পর্কের যোগসূত্রও রয়েছে।

বই পড়ার কিংবা পুরনো বইয়ের গন্ধে নিজের বিবলিওফিল সত্তাকে নতুন করে তরতাজা করে তুলতে চান? তাহলে আপনি অবশ্যই ঘুরে আসতে পারেন রাজস্থানের ভাদারিয়া লাইব্রেরি থেকে। ভাদারিয়া লাইব্রেরিটি রাজস্থানের জয়সলমির জেলার ভাদারিয়া গ্রামে অবস্থিত। সমগ্র লাইব্রেরি জুড়ে রয়েছে প্রায় নয় লাখেরও বেশি বই। আর এই লাইব্রেরির অবস্থানও বেশ অন্যরকম। মাটি থেকে প্রায় ১৬ ফুট নিচে অবস্থিত এই লাইব্রেরিটিতে রয়েছে প্রায় ৪০০০ লোকের বসে বই পড়ার সুব্যবস্থা। একইসঙ্গে নয় লাখেরও বেশি বইয়ের সম্ভারে আপনি অনায়াসেই পেয়ে যাবেন রাজস্থানের সাংস্কৃতিক এবং ঐতিহ্যের ইতিহাস কথা। বিপুল পরিমাণ এই বইয়ের সম্ভার একরকমভাবে এই গ্রন্থাগারটিকে এশিয়ার অন্যতম প্রধান গ্রন্থাগারে পরিণত করেছে।

গ্রন্থাগার তৈরির আদি ইতিহাস

এই গ্রন্থাগার তৈরির ক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকায় ছিলেন হরবংশ সিং নির্মল। তিনি ভাদারিয়া মহারাজ নামেও সুপরিচিত ছিলেন। ভাদারিয়া মহারাজের অনুপ্রেরণাতে জগদম্বা সেবা কমিটি এই গ্রন্থাগার তৈরির ক্ষেত্রে বিশেষ উদ্যোগী হয়ে ওঠেন। এই প্রসঙ্গে উল্লেখ্য এই ক্ষেত্রে বই সংগ্রহের কাজটি শুরু হয় ১৯৯৮ সাল থেকে। শুধুমাত্র গ্রন্থাগারই নয়, এরই সঙ্গে শুরু হয় মন্দির নির্মাণের কাজ এবং এক্ষেত্রেও সেবা কমিটির ভূমিকা লক্ষণীয়। মন্দির নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ হওয়ার পথে ভাদারিয়া মহারাজ এই ভূ-গর্ভস্থ গ্রন্থাগার তৈরির কথা জনসমক্ষে আনেন। অল্প সময়ের মধ্যেই তাঁর পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়, লাইব্রেরি তৈরির পরে তিনি গ্রন্থাগার সংলগ্ন একটি ঘরে থাকতেন, অবসর সময়ে এখানকার বিভিন্ন বই পড়তেন। জ্ঞান আহরণ করতেন।

গ্রন্থাগারের ভিতরে

প্রকৃত বইপ্রেমীদের জন্য এ যেন এক স্বর্গরাজ্য। থরে থরে রাশি রাশি বইয়ের সম্ভার বইপ্রেমিকদের মুগ্ধ করতে বাধ্য। একইসঙ্গে রয়েছে প্রায় ৪০০০ জনের বসে বই পড়ার মস্ত সুযোগ। প্রতিটি বইয়ের আলমারি নিপুণভাবে কারুকার্য করা কাঠের তৈরি, আর আলমারিগুলি কাচ দিয়ে ঘেরা, যার ফলে অনায়াসেই বইয়ের নাম দেখে বই বাছাইয়ের সুযোগ রয়েছে।

বিভিন্ন বইয়ের সম্ভার

এই লাইব্রেরির অন্যতম প্রধান বৈশিষ্টই হল আপনি পাবেন বিভিন্ন ধরনের বই। রকমারি বইয়ের তালিকাতে রয়েছে বিজ্ঞান থেকে দর্শন, অর্থনীতি থেকে ভূগোল, ইতিহাস থেকে দেশ-বিদেশের মানচিত্রের বই। এছাড়া বিভিন্ন ভাষার অভিধান এবং আরও অনেক বই তো রয়েছে।

তাহলে আর দেরি না করে রাজস্থান ভ্রমণের তালিকাতে এই গ্রন্থাগারটিকেও যোগ করে নিতে পারেন...

নিজের বেড়ানোর অভিজ্ঞতা ট্রিপোটোর সঙ্গে ভাগ করে নিন আর সারা বিশ্ব জুড়ে অসংখ্য পর্যটকদের অনুপ্রাণিত করুন।

বিনামূল্যে বেড়াতে যেতে চান? ক্রেডিট জমা করুন আর ট্রিপোটোর হোটেল স্টে আর ভেকেশন প্যাকেজে সেগুলো ব্যবহার করুন।

(এটি একটি অনুবাদকৃত আর্টিকেল। আসল আর্টিকেল পড়তে এখানে ক্লিক করুন!)