ক্লক টাওয়ারের নতুন রূপে সেজে উঠছে খিদিরপুর ডক অঞ্চল...

Tripoto
Photo of ক্লক টাওয়ারের নতুন রূপে সেজে উঠছে খিদিরপুর ডক অঞ্চল... 1/1 by Deya Das

দেশ বা দেশের বাইরে কলকাতা বন্দরের কথা হয়ত অনেকেরই জানা। কারন এই বন্দরের সঙ্গে জড়িয়ে আছে সত্যাগ্রহ আন্দোলনের মত বহু ঐতিহাসিক ঘটনা। তাই জাহাজের মাধ্যমে শুধুমাত্র দ্রব্যসামগ্রী আমদানি-রপ্তানি ছাড়াও এই বন্দরকে ভারতবর্ষের এক আত্মনির্ভরতার প্রতীক হিসাবে গড়ে তুলতে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ২০২০ সালের জানুয়ারী মাসে কলকাতা পোর্ট ট্রাস্টের ১৫০তম বর্ষ উৎযাপনের একটি অনুষ্ঠানে বন্দরের নাম বদলে রেখেছেন শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় বন্দর

তবে নাম পরিবর্তনের পরে এই বন্দরের ছবি কোথাও তেমন দেখা না গেলেও; ২০২১ সালের জুন মাসে প্রতিটি খবরের কাগজের শিরোনামে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় বন্দরের নাম দেখতে পাওয়া যায়। কিন্তু হঠাৎ এই জনপ্রিয়তার কারণ কি? জানা যায় ২০১১ সালে তৈরি হওয়া পৃথিবীর বৃহত্তম মায়ানমারের একটি জাহাজ; যার নাম এম ভি লেক ডি প্রায় ৬৬ হাজার টন কয়লা নিয়ে হলদিয়া বন্দর থেকে ৮০ মাইল দূরের সাগরে কলকাতার খিদিরপুর ডক এবং হলদিয়া ডকের নিকটবর্তী সাগরে নোঙর ফেলে।

Photo of Khidirpur, Kolkata, West Bengal, India by Deya Das

এই জাহাজের পরিচালনা ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ২০ জনের এক বিশেষ দল। পরবর্তীতে অসম্ভব দক্ষ নাবিক এবং কর্মীদের দিয়ে ভাসমান দুটি ক্রেনের সাহায্যে গভীর সমুদ্রের বুক দণ্ডায়মান জাহাজ থেকে কয়লা নামানো হয়। ঠিক এই ঘটনার পরে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় বন্দরের নাম দেশে -বিদেশে বেশ খানিকটা ছড়িয়ে পড়ে। এরপর থেকে বহু পর্যটক আসেন এই বন্দরটি ঘুরে দেখার জন্য।

বর্তমানে এবার শুধু বন্দরের মধ্যে ঘোরাফেরা আবদ্ধ থাকবে না। পর্যটকদের জন্য খিদিরপুর ডকে নতুন একটু হ্যাং-আউট এরিয়া তৈরি করতে চলেছে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় বন্দর কর্তৃপক্ষ। ১২২ বছরের পুরনো ক্লক টাওয়ার বা ঘড়ি মিনারের দ্বারা পুনঃরায় সজ্জিত হতে চলেছে এই জায়গাটি। এছাড়াও এখানে ছোট্ট একটি সংগ্রহশালা তৈরি করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।

Photo of ক্লক টাওয়ারের নতুন রূপে সেজে উঠছে খিদিরপুর ডক অঞ্চল... by Deya Das

১৮৯৯ সালে তৈরি হওয়া এই ঘড়ি মিনারটি বহু ঐতিহাসিক সময়ের সাক্ষ্য প্রমাণ বহন করে নিয়ে চলেছে। সেই সময় এই ঘড়িটি নির্মাণের জন্য গ্লোবাল টেন্ডারকে ডাকা হয়েছিল, যা তখনকার দিনের পরিপ্রেক্ষিতে অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য ঘটনা। পরবর্তীতে কুক এন্ড কেলভি সংস্থা লন্ডন থেকে ঘড়ির যন্ত্রাংশ আনিয়ে প্রায় সাড়ে চার হাজার টাকা দিয়ে এই ঘড়িটি তৈরি করেন। শুধু এটুকুই নয়; খিদিরপুর লকেটের প্রবেশপথে থাকা এই ঘড়ি মিনারটির মিনারের নকশা তৈরি করেছিলেন মহাকরণের নির্মাণকার্য যুক্ত থাকা ডাব্লু ব্যাঙ্কস গোয়াইথার। এই মিনারের নকশাটি সম্পন্ন করার পর তাকে ১০০ টাকা দেওয়া হয়েছিল। দূর থেকে এই মিনারটি দেখা যেত বলে মিনারের ঘড়ি দেখে তখনকার দিনের নাবিকেরা সময় মেলাতেন। মিনারটি নির্মাণ করেছিলেন মার্টিন এন্ড কোম্পানি

Photo of ক্লক টাওয়ারের নতুন রূপে সেজে উঠছে খিদিরপুর ডক অঞ্চল... by Deya Das

২০১১ সালে এই ঘড়িটি অকেজো হয়ে পড়লে সেটিকে সারিয়ে তোলা হয় এবং নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়। সেইজন্যই ইতিহাসের সন্ধিক্ষণ মুখে দণ্ডায়মান এই ঘড়ি মিনার আজ পর্যটকদের কাছে ক্লক টাওয়ারে পরিণত হতে চলেছে।

নিজের বেড়ানোর অভিজ্ঞতা ট্রিপোটোর সঙ্গে ভাগ করে নিন আর সারা বিশ্ব জুড়ে অসংখ্য পর্যটকদের অনুপ্রাণিত করুন।

বিনামূল্যে বেড়াতে যেতে চান? ক্রেডিট জমা করুন আর ট্রিপোটোর হোটেল স্টে আর ভেকেশন প্যাকেজে সেগুলো ব্যবহার করুন।